তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের ফলস্বরূপ আগামী দুই দশক ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজে তরুণদের প্রভাব অব্যাহত থাকবে।
বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আবির্ভূত তরুণ প্রজন্ম তাদের চিন্তাভাবনা, ধারণা ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কমপক্ষে আগামী দুই দশক ধরে রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে।’
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হিসেবে নেতৃত্বদানকারী নাহিদ বলেন, অভিজ্ঞতার অভাব ও অন্যান্য সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তরুণরা সম্ভাব্য সব উপায়ে দেশের জন্য অবদান রাখতে চায়।
তিনি বলেন, দীর্ঘস্থায়ী স্বৈরশাসনের পতনের পর বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম কীভাবে দেশ পুনর্গঠনে অবদান রাখছে, তা এখন সমগ্র বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালনকারী নাহিদ বলেন, ‘তারা (তরুণ) দায়িত্ব গ্রহণ করতে ও ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে প্রস্তুত।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, তাদের ওপর অর্পিত জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস আগামী দিনে আরও সুদৃঢ় হবে।
জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় সারাদেশে প্রায় দুই মাসব্যাপী তারুণ্যের উৎসব, ২০২৫ উদযাপনের প্রাক্কালে নাহিদ এ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক এই উৎসবের লক্ষ্য ঐক্য গড়ে তোলা এবং স্থানীয় বীর ও পরিবর্তনের কারিগরদের অবদানকে সমর্থন করার পাশাপাশি সামনে নিয়ে এসে সহযোগিতার নীতি প্রচার করা।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ উৎখাতের জন্য ২০২৪ সালে তরুণদের ত্যাগ ও প্রতিরোধ কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ স্থাপন করেছে।’
নাহিদ আরও বলেন, সরকার তরুণদের সাথে কাজ করতে এবং তাদেরকে রাজনৈতিক প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরাই সেই তরুণ সমাজের প্রতিনিধি। আমরা তরুণ প্রজন্মকে এমন একটি রাজনৈতিক প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যারা ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ঐতিহাসিকভাবে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে ছাত্ররা অব্যাহতভাবে নেতৃত্বদানে ভূমিকা পালন করে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং ‘২০২৪ বিপ্লব’ দীর্ঘদিনের এই উত্তরাধিকারের সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে মানুষ আশা করছে যে, বাংলাদেশি তরুণরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন ও মানবিক মর্যাদা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
নাহিদ বলেন, তরুণদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এবং তাই সরকার গণঅভ্যুত্থানের আহ্বানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, চাকরি ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত দাবির মাধ্যমে এই গণঅভ্যুত্থানের শুরু হয়েছিল।
নাহিদ বলেন, সঠিক শিক্ষাব্যবস্থার অভাবে বিগত ১৬ বছরে জাতি সামাজিক অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য পতন প্রত্যক্ষ করেছে এবং তাই সরকারকে দেশের শিক্ষা খাতের উন্নতির দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।