চিকিৎসকদের দাবির মুখে কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে প্রায় ৫ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে তাদের সিংহভাগ দাবিই মেনে নেন মুখ্যমন্ত্রী।
আন্দোলনকারীদের পাঁচটি দাবির মধ্যে তিনটি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তবে দাবি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বৈঠক শেষে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের দাবি মেনে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে মঙ্গলবারই সরানো হচ্ছে বিনীত গোয়েলকে। পাশাপাশি ডিসি নর্থ অভিষেক গুপ্তাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কলকাতা পুলিশে আরও কিছু রদবদল করা হবে।
জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবির বিষয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ওদের যে পাঁচটা দাবি ছিল, তার মধ্যে প্রথম দাবি আমাদের হাতে নেই। নির্যাতিতার বিষয় নিয়ে সিবিআই তদন্ত করছে, সুপ্রিম কোর্ট নজরদারি চালাচ্ছে। আর বাকি চার দাবির মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার পদত্যাগ দাবি করেছিল। কিন্তু আমরা ছাত্রছাত্রীদের দাবি মেনে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে স্বপদে বহাল রাখার কথা জানিয়েছেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে তিনজনকেই সরালে স্বাস্থ্য দপ্তর ফাঁকা হয়ে যাবে। তাই স্বাস্থ্য সচিবকে সরানো হয়নি।
এদিকে, বৈঠককে সফল বললেও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ মঞ্চে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক সফল হলেও এখনই কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হচ্ছে না।
চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দেবাশীষ হালদার বলেন, আন্দোলনকারীদের কাছে নতিস্বীকার করল রাজ্য সরকার। ৩৮ দিন পর আমাদের জয় হয়েছে। এই জয় সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক, নার্স সবার। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ‘ধরনা বিক্ষোভ’ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নয়। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পর আমরা আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেব।