সোমবার নিশ্চিতভাবেই পৃথিবীর অন্যতম সুখী মানুষ ছিলেন আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের ডানহাতি ব্যাটার অ্যামি হান্টার। একে তো ছিলো নিজের জন্মদিন, তার ওপর মাঠে নেমে গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড। অথচ এখনও কি না স্কুলের গন্ডিই পার করেননি ১৬ বছর বয়সী এ আইরিশ তারকা।
আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড মোহাম্মদ আশরাফুলের দখলে। তিনি ২০০১ সালে মাত্র ১৭ বছর ৬১ দিন বয়সে করেছিলেন টেস্ট সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে ১৯৯৬ সালে মাত্র ১৬ বছর ২১৭ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করেছিলেন শহিদ আফ্রিদি। তবে তিন বছর পর আফ্রিদির রেকর্ড ভেঙে ১৬ বলে ২০৫ দিন বয়সে ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার মিথালি রাজ।
এই সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের স্কুলবালিকা অ্যামি হান্টার। সোমবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে নিজের ১৬তম জন্মদিনে খেলেছেন ১২১ রানের ইনিংস। যার সুবাদে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড এখন নিজের করে নিয়েছেন হান্টার।
গত ৫ অক্টোবর ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিলো হান্টারের। প্রথম তিন ওয়ানডেতে তার স্কোর ছিলো যথাক্রমে ২, ১ ও ৪। সেই তিনিই কিনা অভিষেকের সপ্তম দিনের মাথায় চতুর্থ ম্যাচে নেমে খেলেছেন ১২৭ বলে ১২১ রানের অপরাজিত ইনিংস। যেখানে ছিলো ৮টি চারের মার।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি আইরিশ নারী দলের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডও গড়েছেন হান্টার। ২০০০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১২০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কারেন ইয়ং। সেটিকে দুইয়ে নামিয়ে দিলেন হান্টার।
বার্থডে গার্লের জন্মদিনে করা সেঞ্চুরির সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩১২ রান করে আয়ারল্যান্ড। জবাবে ২২৭ রানে থামে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ফলে ৮৫ রানের জয়ে সিরিজটিও ৩-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে আইরিশ নারী দল।
বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পর ম্যাচ শেষে হান্টার বলেছেন, ‘সত্যিই অনেক ভালো অনুভূতি। আমার কাছে এখনও পরাবাস্তব মনে হচ্ছে। ফিফটি করার পর আমি চাচ্ছিলাম উইকেটে টিকে থাকতে। এরপর যখন সেঞ্চুরি করলাম বুঝতেই পারছিলাম না কী করবো, হেলমেট খুলবো নাকি পরাই থাকবে। কারণ এটি অবিশ্বাস্য ছিলো।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি ফিফটির সময় নার্ভাস ছিলাম। প্রথম তিন ম্যাচে ভালো করতে পারিনি। তাই উইকেটে থাকতে পেরেই খুব ভালো লাগছিলো। প্রথম চার মারার পর বাকিটা ধারায় চলে গেছে। শূন্য থেকে পঞ্চাশের চেয়ে, পঞ্চাশ থেকে সেঞ্চুরিটা যেনো বেশি দ্রুত হয়েছে।’