রাশিয়ার রাজধানী মস্কো এবং দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত প্রায় ১৫০টি ড্রোন ছুড়েছে ইউক্রেন। মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।
ইউক্রেন থেকে ছোড়া ড্রোনগুলোর মধ্যে ১৪৪টিকে অবশ্য আঘাত হানার আগেই ভূপাতিত করতে পেরেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রুশ সেনাবাহিনী ব্রায়ানস্কে ৭২টি, মস্কোতে ২০টি, ক্রুস্কে ১৪টি, তুলায় ১৩টি এবং দেশের অন্যান্য অংশে মোট ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে।”তবে পাঁচটি ড্রোন ভূপাতিত করা সম্ভব হয়নি। সেগুলোর মধ্যে একটির আঘাতে মস্কোতে ৪৬ বছর বয়সী এক নারী নিহত এবং ৯ বছর বয়সী এক শিশু আহত হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছেন মস্কোর মেয়র আন্দ্রিয়ে ভোরোবয়োভ।
ব্যাপক এই ড্রোন হামলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মস্কোর দুই ব্যস্ত বিমানবন্দর দোমোদেদোভো এবং শেরেমেতোয়োভোর। দুই বিমানবন্দরই মঙ্গলবার ফ্লাইট স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছে।সবচেয়ে বেশি ড্রোন হামলার ঘটনা হয়েছে ব্রায়ানস্ক প্রদেশে। এই প্রদেশটি ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী। তবে ড্রোনের আঘাতে সেখানে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে এক টেলিগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন ব্রায়নস্কের গভর্নর আলেক্সান্দার বোগোমাস।
লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া, এবং রাশিয়ার আপত্তি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবির চালানোর অভিযোগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই অভিযান এখনও চলছে।ইতোমধ্যে ইউক্রেনের চার প্রদেশ দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসনকে নিজেদের মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত করেছে রাশিয়া। এই চার প্রদেশের বেশি কিছু এলাকা নিজেদের দখলেও আনতে সক্ষম হয়েছে রুশ বাহিনী।
সোমবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের সংলগ্ন মেমরিক নামের একটি গ্রাম দখল করে রুশ সেনারা। এই গ্রাম থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর অস্ত্র-গোলাবারুদ-রসদের একটি বড় ভাণ্ডার রয়েছে।মেমরিক দখলের কয়েক ঘণ্টা পর রাশিয়ার উদ্দেশে এই ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেনীয় বাহিনী।