ইউক্রেন সংকটে চলমান পরিস্থিতি উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। ঢাকা আশা করে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দুই পক্ষ আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ একটি সমাধানে পৌঁছবে। এ সংকটে কোনো পক্ষ নেবে না বাংলাদেশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে স্পষ্ট করেই এমন বার্তা দিয়েছে ঢাকা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) এই দুই কূটনীতিক পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি ঢাকার এই অবস্থান জানিয়ে দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে কাউকে সমর্থন দিতে চায় না বাংলাদেশ। আমরা বলেছি, এখানে সব দেশই আমাদের বন্ধু। আমরা চাই না আমাদের এমন এক অবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হোক, যেখানে বন্ধুদের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হয়।’
এর আগে গত সপ্তাহে রুশ রাষ্ট্রদূতও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করেন এবং ওই দেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা চাই সব পক্ষ যেন সর্বোচ্চ সংযত ব্যবহার করে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়।’
ইউক্রেনে সংঘাত হলে এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে কোনো দ্বন্দ্ব স্থানীয় থাকে না এবং এর একটি বৈশ্বিক প্রভাব রয়েছে। আগামীকাল ওই অঞ্চলে যদি গোলযোগ শুরু হয় তবে এর প্রভাব সারাবিশ্বে পড়বে।’
রাশিয়ার ওপর অবরোধ বা তাদের জ্বালানি পাইপলাইন বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে ইউরোপের বিকল্প জ্বালানির উৎস বের করতে হবে।’
সচিব বলেন, ‘ইউরোপ যদি মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সংগ্রহ করে, তবে আগামী এক বা দুই বছর মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি সরবরাহে বাড়তি চাপ পড়বে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হলে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়তে পারে।’
তিনি বলেন, ‘সংঘাত কীভাবে প্রশমন করা যায় সেটা নিয়ে তারা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে এবং এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গেও তারা কথা বলছে।
সদ্য বিদায়ী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আগে আনুষ্ঠানিক পত্রে এই সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বাংলাদেশকে জানিয়ে যান বলে জানান মাসুদ বিন মোমেন।
বিদেশি কূটনীতিকরা কী বলেছেন জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘তারা মনে করে এই সংঘাত আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য হুমকি।’