ইসরায়েলে ইরানের ঘোষিত হামলা বিলম্বিত করতে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। একঝাঁক যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর তিন শীর্ষ উপদেষ্টাকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়েছেন। গত সপ্তাহে পাঠানো এ কর্মকর্তাদের মধ্যে সিআইএ পরিচালক বিল বার্নসও রয়েছেন। খবর সিবিএস নিউজ।
যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন হলো, ইরান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের অবসান লক্ষ্যে দোহায় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে ব্যাহত করতে চাইবে না। এই আলোচনা আরও কয়েক দিন চলতে পারে। তবে এই আলোচনার দোহায় দিয়ে ইরান এবং এর প্রক্সিদের কতদিন ধরে রাখা যাবে তা স্পষ্ট নয়।
দুই সপ্তাহ আগে তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং জুলাইয়ে বৈরুতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ সুকরের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরান ও হিজবুল্লাহ। তবে কখন বা কীভাবে এই প্রতিশোধ নেওয়া হবে, তা নির্দিষ্ট করেনি তারা।
মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েল ও হামাসকে জিম্মি মুক্তি এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি হলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান উত্তেজনা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও প্রশমিত করা যাবে।
এদিকে, টানা দ্বিতীয় দিনের মতো নতুন করে গাজার কিছু এলাকার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এলাকাগুলোয় শিগগির হামলা চালানো হবে বলে জানিয়েছে দখলদার দেশটি। শুক্রবার নতুন করে খালি করতে বলা এলাকাগুলো হলো– পূর্ব দেইর এল-বালাহ, আল-কারারা, আল-মাওয়াসি, আল-জালা, হামাদ সিটি ও নাসর। এ এলাকাগুলোর বেশ কয়েকটি মানবিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল এবং গাজার অন্য এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল। এরই মধ্যে আল-মাওয়াসিতে দেশটির বোমা হামলায় তিন শিশুসহ চার ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতভর উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে হামলায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
নতুন করে উচ্ছেদের আদেশের পর জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, গাজার পরিবারগুলোর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। সর্বশেষ উচ্ছেদের এই আদেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত ছিটমহলে ফিলিস্তিনিদের জন্য মৃত্যু ও ধ্বংসের অন্তহীন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা থেকে এখনও কোনো ইতিবাচক সংকেত নেই বলে জানিয়েছে হামাসের মুখপাত্র ওসামা হামদান। দোহায় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, মধ্যস্থতাকারীরা এখনও শূন্যস্থান পূরণের বিষয়ে কথা বলছেন। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, ইসরায়েলি পক্ষ আরও শর্ত যোগ করছে। আমি বিশ্বাস করি, তারা প্রক্রিয়াটিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।