পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবি নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনীতি। বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সাধারণ জনতাও। সোমবার রাতে দেশটির পার্লামেন্ট চত্বরে বিক্ষোভরত পিটিআই এমপিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অবস্থায় দেশটির রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন মোড়। পিটিআই নেতাকর্মীরা তাদের কারাবন্দি নেতা ইমরান খানকে মুক্তি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। খবর আলজাজিরার।
বেশ কয়েকটি অভিযোগে গত বছরের আগস্টে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ইমরানের মুক্তি দাবি করেছে। সরকার সামরিক আদালতে ইমরানের বিচার করার ইঙ্গিত দেওয়ায় আরও ক্ষিপ্ত পিটিআই নেতাকর্মীরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসলামাবাদে পিটিআইর সমাবেশে হাজার হাজার জনতা অংশ নিয়েছে। সেখান থেকেই নেতাদের জোর করে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। তাছাড়া ইসলামাবাদের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। পিটিআইর চেয়ারম্যান গওহর আলী খানসহ ১৩ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পর এই সমাবেশই ছিল পিটিআইর সবচেয়ে বড়।
সোমবার পিটিআইর জনসভা ঘিরে পুলিশ-জনতা বেশ কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। পুলিশ জনতার ওপর গুলি ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। তবে পুলিশের অভিযোগ, মিছিল থেকে পাথর ছোড়া হয়েছে।
সমাবেশে পিটিআই শীর্ষ নেতা ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর কড়া বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ইমরান খানকে মুক্তি না দিলে জনতাই তাঁকে মুক্ত করে নিয়ে আসবে। গান্দাপুরের এই আলটিমেটাম পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই বক্তব্যের পর গান্দাপুরকে আটক করা হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক তালাত হুসেন বলেন, গান্দাপুরের আলটিমেটামের পর পিটিআই নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য সামরিক বাহিনীর জন্য একটি শক্তিশালী উচ্চারণ ছিল।
পাকিস্তান সিনেটের সাবেক সদস্য মোস্তফা নওয়াজ খোকার বলেন, ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার পরও পিটিআই দমে যায়নি। পিটিআইর রাজনৈতিক ভিত্তি দুর্বল হলেও দলটি জনপ্রিয়তায় শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরাপত্তা বাহিনীর গলগ্রহ হওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান।
লাহোর-ভিত্তিক রাজনৈতিক ভাষ্যকার মজিদ নিজামি বলেন, পিটিআই ও সরকারের মধ্যে সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠেছে। পিটিআইর ওপর দিয়ে আবারও দমনপীড়নের ভয়াল থাবা নেমে আসতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।