ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর এলাকায় সহিংসতা ও অবৈধ ভবন নির্মাণের অভিযোগে এক ইসরায়েলি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা এবং একটি ভবন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় (ট্রেজারি বিভাগ) এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ট্রেজারি বিভাগ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, আমানার বিরুদ্ধে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের নিরাপত্তা ও সমর্থন প্রদানের পাশাপাশি পশ্চিম তীরের জমি দখল এবং উগ্র ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার অবিযোগ রয়েছে।
যে ভবন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, সেটি আমানার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত; নাম—বিনয়ানেই বার আমানা। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত দখলকৃত জমির ওপর ভবন নির্মাণ করে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের কাছে বিক্রি করত।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিক কিংবা বাসিন্দা আমানা এবং বিনয়ানেই বার আমানার সঙ্গে অর্থ লেনদেন করতে পারবেন না। পাশাপাশি এ দুই সংস্থায় কর্মরত বা এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ করতে পারবেন না এবং যুক্তরাষ্ট্রে এ দুই সংস্থার যত সম্পত্তি রয়েছে, সেগুলো ফ্রিজ অবস্থায় থাকবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় সশস্ত্র ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে সংঘাত ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। পশ্চিম তীর অঞ্চলে সংঘাতের উল্লম্ফনের জন্য মূলত দায়ী ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা।
পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ইসরায়েলকে বেশ কয়েকবার সতর্কবার্তা দিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে ইসরায়েল সেসব বার্তায় কর্ণপাত না করায় চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা শুরু করে ওয়াশিংটিন।
এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পশ্চিম তীরে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে গত সপ্তাহে আমানা, বিনয়ানেই বার আমানা এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার দুই সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আহ্বান জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের উচ্চ ও নিম্নকক্ষের প্রায় ৯০ জন আইনপ্রণেতা।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, আইনপ্রণেতাদের সেই আহ্বানের প্রতি সম্মান জানিয়ে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে দুই মন্ত্রির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।