দেশের ১২ কোটি মানুষকে কোভিড টিকার আওতায় আনার যে লক্ষ্যমাত্রা সরকার নিয়েছে, তার কাছাকাছি পৌঁছানোর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
শুক্রবার অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে নয় কোটি ২৪ লাখ ২৬ হাজার ২৩৩ জন, যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
আর দুই ডোজ পেয়েছেন পাঁচ কোটি ৮০ লাখ পাঁচ হাজার ২৫৯ জন, যা লক্ষ্যমাত্রার ৪৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী এক কোটি ২৮ লাখ ৯৭ হাজার ৯০৯ জন টিকা পেয়েছে। এক কোটি ২৯ লাখ কিশোর-কিশোরীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অচিরেই পূরণ হবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এছাড়া ষাটোর্ধ্ব, সম্মুখ সারির কর্মী এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে দেওয়া হচ্ছে কোভিডস টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ।
বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৩ লাখ ১৭ হাজারের বেশি। মহামারী মোকাবিলায় জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে ১১ কোটি ৯২ লাখ ২১ হাজারের বেশি মানুষকে দেওয়া হবে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ওই বছর ডিসেম্বরে শেষ দিকে সরকার যে পরিকল্পনা করেছিল, তাতে ৮০ শতাংশ বা ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার কথা ছিল।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ীই দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
“এটা কমানো হয়নি। আমাদের টার্গেট ৭০ শতাংশ মানুষকে দেওয়া। ডব্লিউএইচওর নির্দেশনা ছিল সাড়ে ১২ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া। সেটা আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ। আমাদের দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ দেশের বাইরে আছেন। তাদের কেউ কেউ আমাদের এখান থেকে টিকা নিয়ে যায়, আবার বিদেশ থেকে কেউ কেউ টিকা নিয়ে আসেন। সে হিসাবে আমরা যে লক্ষ্যের কথা বলেছি তা ঠিক আছে।
“সেই সংখ্যা ধরে এখন পর্যন্ত আমরা ১৫ কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছি। প্রথম ডোজ দিয়েছি ৯ কোটি ২৪ লাখ ডোজ, দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে পাঁচ কোটি ৮০ লাখ ডোজ। আমাদের হাতে আরও প্রায় ৯ কোটি ডোজ টিকা রয়েছে। সবাই (লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী) টিকা পাবেন এমন টিকা মজুদ রয়েছে।”
কোভিড-১৯ টিকাদান কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা যখন জাতীয়ভাবে টিকাদান পরিকল্পনা করি তখন ৭০ ভাগ লোককে টিকা দিতে হবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এমন সুপারিশ ছিল না। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ৭০ শতাংশের লক্ষ্য ঠিক করে দেওয়ার পর আমরাও এই হিসাবে টিকা দিচ্ছি।”
দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবের পর সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করে, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়। টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে চললেও স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতারে কারণে পরিস্থিতি নাজুক হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।
পিএস/এনআই