ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বচসার জেরে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালুরু জেলার কুডুপু এলাকায়। ঘটনার সূত্রপাত রোববার বিকেলে ভাত্রা কাল্লুর্তি মন্দির সংলগ্ন একটি পাড়ার গলিতে, যেখানে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন এক যুবকের বিরুদ্ধে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এবং মুহূর্তের মধ্যেই বচসা রূপ নেয় গণপিটুনিতে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, খেলায় অংশগ্রহণকারী দুই ব্যক্তির মধ্যে বচসা শুরু হয়, পরে একাধিক ব্যক্তি মিলে লাঠি ও কাঠের টুকরো দিয়ে এক যুবককে নির্মমভাবে প্রহার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত যুবক কেরলের বাসিন্দা এবং পেশায় শ্রমিক। তার পরিচয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। বিকেল তিনটায় শুরু হওয়া হামলার ঘটনা পুলিশ জানতে পারে সাড়ে পাঁচটার দিকে, যখন ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় কুলশেখর চৌকির এক বাসিন্দা দীপক কুমার থানায় ছবি ও ভিডিওসহ লিখিত অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ তৎপর হয় এবং একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে। রাতেই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয় ও প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়, আক্রান্ত যুবককে বারবার আঘাত করা হয়েছিল, যার ফলে শরীরে তীব্র রক্তক্ষরণ হয়। পিঠ, নিতম্ব ও যৌনাঙ্গে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ম্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল বলেন, “এটি অত্যন্ত নৃশংস ও নজিরবিহীন ঘটনা। সময়মতো চিকিৎসা পেলে হয়তো প্রাণে বাঁচানো যেত।”
এই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে কুডুপু, নির্মারগা ও ভামঞ্জুর এলাকার ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ মনে করছে, কমপক্ষে ২৫ জন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণপিটুনিতে হত্যা ও সহিংসতার ধারায় মামলা করা হয়েছে, যা প্রমাণিত হলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ফাঁসি পর্যন্ত হতে পারে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, “ঠিক কী ঘটেছিল ও কারা জড়িত ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কোনও সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে অভিযোগ তোলা অনুচিত। রাজ্যের মানুষকে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ করছি।”