বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকলেও বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্কে একটা দূরত্ব রয়েছে। এ দূরত্ব দূর করে বাংলাদেশের মানুষ যেন দিল্লিকে ঘনিষ্ট বন্ধু মনে করে, তা নিয়ে কাজ করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রোববার (১১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আমরা কারও সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক রাখতে চাই না। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে বন্ধুত্বপূর্ণ পর্যায়ে নিতে দিল্লির সহায়তা দরকার।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সোনালী অধ্যায় নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, এ নিয়ে আমিও বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছি, সেটার সঙ্গে বিরোধ কীভাবে করি। আমি মনে করি, দুদেশের সরকারের মধ্যে খুব ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। এটা আমরা সবাই জানি এবং আমি আমার কথায় ও লেখায় বলেছিও। অনেকেই সেটা বলেছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখানে একটা কথা, সম্পর্কের ব্যাপারে মানুষের মাঝে বা মনে যে কতটুকু সোনালী অধ্যায় চলছিল সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আমরা চেষ্টা করবো সেই সন্দেহ কাটিয়ে ওঠার। সম্পর্কটা শুধু দুদেশের মধ্যে না, সরকারের মধ্যে না, দুই দেশের সার্বিক যে অস্তিত্ব তার মধ্যে মানুষ খুব গুরত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, মানুষ যেন ভাবে ভারত আমাদের ঘনিষ্ট বন্ধু, আমরা এটাই চাই। বাংলাদেশের মানুষ যেন ভাবে ভারত আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ট বন্ধু। আমরা সেদিকে সম্পর্কটাকে নিয়ে যেতে চাই এবং আমরা চাইবো ভারত আমাদের সহায়তা করবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেততৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশি পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে ভারসাম্য নীতিতে সম্পর্ক করতে চায়। নতুন সরকার ভারত, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমানতালে সম্পর্ক রক্ষা করার বার্তা দিয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক সেটা আমরা চেষ্টা করছি যতটুকু স্মুথ (মসৃণ) করা যায়। আমরা সমর্থন হিসেবে অনেকের কাছ থেকে ইতিবাচক ইঙ্গিত পাচ্ছি। আমরা আশা করছি, এ সরকার বিদেশিদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালোভাবে রক্ষা করতে পারবে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা ভারসাম্যে বিশ্বাসী। একপেশে সম্পর্কের কোনো মানে নেই। সরকার সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার বিষয়ে বদ্ধপরিকর। কারও সঙ্গে আমরা খারাপ সম্পর্ক রাখতে চাই না। আমরা যেমন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখবো, চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো রাখবো। এটা আমরা করে আসছি।
তিনি বলেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এবং আমাদের অন্যান্য পার্টনার যারা আছে ইউরোপ বলেন বা পূর্ব এশিয়া- সবার সঙ্গে স্মুথ এবং ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই। আমরা এটা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো। জাতিসংঘ আমাদের সহায়তা করতে চায়, এটা জানিয়েছে।
পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর যেসব কনসার্ন বিভিন্ন সময়ে ব্যক্ত হয়েছে, বস্তুত সেটা কিন্তু আমাদেরই কনসার্ন। মানবাধিকার নিয়ে যদি কেউ কিছু বলে এবং সেটা যদি বাস্তবে সত্য হয় তাহলে কনসার্ন কিন্তু আমাদের। এ সমস্যার কারণে তারা যেন কিছু বলতে না পারে। মানবাধিকারের বিষয়ে সরকার বেশ গুরত্ব দেবে।