মাসচারেক আগে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে যখন লোকসভা নির্বাচন হয়, তখনই বোঝা যাচ্ছিল ওখানে কিছু একটা বড়সড় পরিবর্তন অবশ্যই ঘটছে!
কারণ যে কাশ্মীর একদা ‘ভোট বয়কট’ আর ‘সেনা জবরদস্তি’র জন্য পরিচিত ছিল, সেখানে মে মাসে গোটা রাজ্যেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট পড়ে প্রায় ৫৯ শতাংশের কাছাকাছি! ভোটে সেই অকল্পনীয় সাড়া মেলার পর এখন সেপ্টেম্বরে এসে বিধানসভা নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে, প্রথম দফায় ভোট পড়ার হার প্রায় ৬২ শতাংশে পৌঁছে গেছে – বিগত প্রায় চল্লিশ বছরের মধ্যে যে জিনিস কখনও ঘটেনি।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম দফার ভোটের পরই রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা পি কে পোলে জানান, কাশ্মীরে লোকসভা আর বিধানসভা নির্বাচন মিলিয়ে গত সাতটা ভোটের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এই হিসেব। আর বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণেও অভাবনীয় সাড়া মিলেছে, প্রাথমিক হিসেবে সে দিনও ভোট পড়েছে ৫৬ শতাংশর বেশি।এর মধ্যে জম্মুর মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকা কিশতওয়ারে ভোটদানের হার তো ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। জম্মুর রামবান জেলায় ৭০ শতাংশ বা কাশ্মীরের কুলগামেও ৬৫ শতাংশ ভোটার পোলিং বুথে এসেছেন – আর সর্বত্রই ভোট হয়েছে রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশে।
অথচ এই কাশ্মীরেই মাত্র কিছুকাল আগেও নির্বাচন মানেই ছিল হুরিয়ত কনফারেন্স বা বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদীর গোষ্ঠীর ভোট বয়কটের ডাক। ভোট দিতে গেলে জঙ্গী হামলার মুখে পড়তে হবে, ছিল এই আতঙ্কের চোরা স্রোতও।আর পাশাপাশি অভিযোগ উঠত, বয়কটের ডাক ব্যর্থ করতে ভারতীয় সেনাবাহিনী জোর করে এক-আধটা আস্ত গ্রামকে বন্দুকের মুখে পোলিং বুথে নিয়ে গেছে – যাতে অন্তত এই ছবিটা তুলে ধরা যায় যে কাশ্মীরে ভোট দিতেও মানুষের লাইন পড়ছে!