প্রথমবারের মত ২০২২ সালে ব্যালন ডি’অর জয়ের তালিকার শীর্ষে ছিল না লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ান রোনালদোর নাম। সে সময় অনেকেই মনে করেছিল, এই মনে হয় শেষ হতে চলেছে মেসি-রোনালদো যুগ। তবে সময়ের সঙ্গে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। এখন ব্যালন ডি’অর জেতার দৌড়ে সব থেকে এগিয়ে আছেন সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ী দল আর্জেন্টিনার প্রাণ ভ্রোমরা লিওনেল মেসি। যেখানে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে।
কাতার বিশ্বকাপে ক্লাব সতীর্থ এমবাপের বিশ্বকাপ অর্জনের মাইলফলককে ছুঁয়ে ফেলেছেন মেসি। এরপরই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে বিশ্বকাপ ফাইনালে রোমঞ্চকর লড়াইয়ের পর এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে এগিয়ে থাকছেন কে? যে দ্বৈরথে লা পুলগা’র একমাত্র প্রতিপক্ষ এমবাপে। ক্লাব পর্যায়ে একই দলের জার্সিতে মাঠ মাতালেও মেসি ও এমবাপের এই লড়াই কোথায় গিয়ে পৌঁছায়, সেটাই দেখার জন্য অপেক্ষা করছে পুরো ফুটবল দুনিয়া।
যে দ্বৈরথের প্ৰথম পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে বুধবার। বিশ্বকাপের লম্বা বিরতির পর এবার প্ৰথমবারের মতো মাঠে নামার অপেক্ষায় মেসি। প্রতিপক্ষ এঞ্জার্স। এর আগে গত সপ্তাহেই মেসি প্যারিসে এসে অনুশীলন শুরু করেছেন। কোচ ক্রিস্টোফ গ্যালতিয়ের জানিয়েছেন, এঞ্জার্স ম্যাচে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত আছেন মেসি।
এর আগে ফ্রান্সের হয়ে মাত্র ৫ জন ফুটবলার পেয়েছেন ব্যালন ডি’অরের খেতাব। যেখানে মেসি একাই রেকর্ড ৭ বার জিতেছেন এই শিরোপা। তাই জিদান ও বেনজেমার পর এবার এই কীর্তি অর্জনে মুখিয়ে আছেন এমবাপে।
২০১৪ সাল থেকে এই অ্যাওয়ার্ডে নিজেদের অবস্থানকে শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন মেসি ও রোনালদো। মাঝে ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের জন্য কোনও ফুটবলার পাননি এই পুরস্কার। তাছাড়াও ২০১৮ সালে ক্রোয়েট তারকা লুকা মদ্রিচ ও ২০২২ সালে ফরাসি ফুটবলার করিম বেনজেমা জিতে নেন এই পুরস্কার। বেনজেমা এই শিরোপা নিজের করে নেওয়ার পরেই এমবাপে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘আমি এই খেতাব একবার অথবা বারবার অর্জন করতে চাইব। তবে সবকিছুর একটা প্রক্রিয়া থাকে। অবশ্যই আমার মনে হয় সঠিক পথে এগোচ্ছি।’
তবে এই দৌড়ে লড়াইয়ের জন্য আবির্ভাব হতে পারে ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড আর্লিং হল্যান্ডের নাম। তবে বিশ্বকাপে তার দল নরওয়ে এখন পর্যন্ত না খেলতে পারায়, এই দ্বৈরথে টিকে থাকতে বেগ পেতে হতে পারে সুঠামদেহী সুপার ফরোয়ার্ডকে।
কাতার বিশ্বকাপে দারুণ সময় কাটিয়ে শিরোপা নিজ ঝুলিতে তুলেছেন মেসি। ৭টি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়েও করিয়েছেন একাধিক গোল। তাছাড়াও লুসাইলের ফাইনালে ফরাসিদের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ গোলের ব্যবধানে ২ টি গোলই এসেছে তার জাদুকরী পা থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বকাপের গোল্ডেন বলও আদায় করে নিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।
অন্যদিকে পুরো আসরে ৮ গোল করে ফরাসি ফুটবলার এমবাপে জিতে নিয়েছেন গোল্ডেন বুট। সেই সঙ্গে ফাইনালে করেছেন হ্যাট্রিক। তবে ব্যালন ডি’অর জিততে হলে প্ৰথমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করতে হবে কিলিয়ানকে। যেখানে মেসি এর আগে চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন বার্সেলোনার হয়ে। তবে আগে পিএসজি কখনই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতেনি। তাই ব্যালন ডি’অর দ্বৈরথে বরাবরই পিএসজি তারকারা পিছিয়ে থাকেন। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতলে তাই এমবাপের সামনেও বড় সুযোগ থাকবে ব্যালন ডি’অর নিজের করে নেওয়ার।
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত