খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ভ্যানচালক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ৩৬ দিনের মাথায় খুলনা জেলা পুলিশ এই সফলতা অর্জন করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ মার্চ ২০২৫ খ্রিঃ ডুমুরিয়া উপজেলার উত্তর গোবিন্দকাঠি এলাকায় ভদ্রা নদীর পাড় সংলগ্ন একটি বাগান থেকে ভ্যানচালক মোঃ মহিদুল শেখ @ মিলন (৩৮) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
হত্যাকাণ্ডের পর ডুমুরিয়া থানায় একটি মামলা রুজু হয়। খুলনা জেলা পুলিশ সুপার জনাব টি. এম. মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং তদন্তে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ খায়রুল আনাম, বিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম গঠন করে ক্লুলেস এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ।
তদন্তের ধারাবাহিকতায় গত ১৮ এপ্রিল খুলনা জেলা পুলিশের দুটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম, খুলনা ও যশোর জেলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—
১। শরীফুল শেখ (৪৫),
২। মোঃ রাফসান @ রফসান (২৪),
৩। মোঃ এনাম @ এনামুল (২৩),
৪। মোঃ গফুর ফকির (৪৩) এবং
৫। মঞ্জুরুল সরদার (৪২)।
গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে নিহতের ছিনতাইকৃত ইঞ্জিনচালিত ভ্যান গাড়িটিও উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হত্যার দিন সন্ধ্যায় রাফসান ও এনামুল ভিকটিমের ভ্যান ভাড়া করে উত্তর গোবিন্দকাঠি ঈদগাহ মাঠে নিয়ে যায়, যেখানে পূর্ব থেকেই শরীফুল শেখ ও মঞ্জুরুল সরদার অবস্থান করছিলেন। পরে তারা চারজন মিলে ভিকটিমকে নদীর পাশের একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং তার ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে গাড়িটি গফুর ফকিরের কাছে বিক্রি করে দেয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
এ ঘটনায় খুলনা জেলা পুলিশ সুপার ও তদন্ত টিমের কার্যকর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী। তারা দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।