চাকরি স্থায়ীকরণ ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপারডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের এক হাজার ৪ জন প্রকল্পের কর্মী। এসময় তারা জানান, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন। মহামারির সময় ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়েও এখন তারা অবহেলার শিকার।
রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সামনে শান্তিপূর্ণ এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
আন্দোলনকারীরা বলেন, কোভিডের সময়ে যখন সবাই ঘরে, তখন আমরা হাসপাতাল, কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে কাজ করেছি। আজ আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমরা চাই সরকার আমাদের কাজের স্বীকৃতি দিক এবং চাকরি স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা করুক। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ অত্যন্ত জরুরি। নতুন করে প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন জনবল গড়ার চেয়ে আমাদের ধরে রাখাই হবে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত।
প্রকল্পের কর্মীরা বলেন, এখন আমাদের কারও চাকরির বয়স নাই। এই অবস্থায় হঠাৎ করেই এক হাজার ৪ জন জনবল বেকার হয়ে যাবে। আমাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অনাহারে জীবনযাপন করতে হবে। আমরা যারা দক্ষ জনবল রয়েছি, তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, করোনা মহামারির সময় আমাদের তিন মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। যদি তিন মাস পর আমাদের চাকরি চলে যেত, তাহলে আজ আমরা এখানে আসতাম না। আমরা অন্য কোনো জায়গায় কাজ খুঁজে নিতাম। কিন্তু রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আমাদের ছয় মাস করে মেয়াদ বাড়িয়ে আজ এই অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে।
প্রকল্পের কর্মীরা জানান, তাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, মেডিকেল টেকনিশিয়ানসহ স্বাস্থ্যখাতের নানা পদে দক্ষ জনবল রয়েছে। টিকা কর্মসূচি, র্যাপিড রেসপন্স টিম, কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থাপনা ও করোনা পরীক্ষা পরিচালনাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজের অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও তাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে।
তাদের দাবি, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। এখনই কর্মীদের বাদ দেওয়া অযৌক্তিক ও অমানবিক। তাদের বাদ দিয়ে নতুন নিয়োগ দেওয়া হলে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হবে।
সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এই কর্মীরা। দাবি বাস্তবায়নে প্রয়োজনে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচিরও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এর আগে, গত বছরের ১৭ নভেম্বর সকাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় তিন দফা দাবি জানান প্রকল্পের কর্মীরা।
সেগুলো হলো— কোভিড-১৯ মহামারি যোদ্ধাদের ৩১ ডিসেম্বরের পর চাকরি বহাল; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত পঞ্চম সেক্টর কর্মসূচিভুক্ত ওপিগুলো অতি দ্রুত এক হাজার ৪ জন জনবলকে বহাল রেখে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং কোভিড-১৯ যোদ্ধাদের বয়স শিথিল রেখে যথাযথ নিয়ম মেনে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত করতে হবে।