বিশ্বব্যাপী পাল্টা শুল্ক আরোপের নাটকীয়তার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনগণকে শেয়ার কিনতে উৎসাহিত করে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে কারসাজি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ট্রাম্প জড়িত ছিলেন কি না- তা তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন কয়েকজন মার্কিন সিনেটর।
ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর অ্যাডাম শিফ অভ্যন্তরীণ ব্যবসায়ের তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ট্রাম্পের প্রশাসনের মধ্যে কে আগে থেকে শেয়ার বাজারের দরপতন সম্পর্কে জানতেন? কেউ কি শেয়ার কিনেছেন বা বিক্রি করেছেন এবং জনগণের খরচে লাভ করেছেন?’
‘আমি হোয়াইট হাউসের উদ্দেশে লিখছি- জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।’, যোগ করেন তিনি।
‘আপনি জানতেন এ শুল্ক বন্ধ হতে চলেছে, তাহলে আপনি কেন আপনার উদ্বোধনী বিবৃতিতে এটি অন্তর্ভুক্ত করেননি? আপনি কেন আপনার সাক্ষ্যে এটি উল্লেখ করেননি?’ নেভাদার একজন ক্ষুব্ধ ডেমোক্র্যাটিক প্রতিনিধি স্টিভেন হর্সফোর্ড বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারকে প্রশ্ন করেছিলেন।
‘আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার কথোপকথন প্রকাশ করি না।,’ গ্রিয়ার উত্তর দিয়েছিলেন।
ডেমোক্র্যাটিক প্রতিনিধিরা এ অভিযোগ করছেন কারণ বিশ্বে পাল্টা শুল্ক আরোপের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ খোলার কয়েক মিনিট পরেই ঘোষণা করেছিলেন, ‘এটাই শেয়ার কেনার দুর্দান্ত সময়!!!’
এর চার ঘণ্টা পর, চীন বাদে অন্য সব দেশ থেকে আমদানি পণ্যের উপর বর্ধিত শুল্ক আরোপের বিষয়টি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। এর পরই ঊর্ধ্বমুখী হয় মার্কিন শেয়ার সূচক।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্কনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। গত কয়েক দিন যাবৎ বাজার মারাত্মকভাবে অস্থির থাকায় আমেরিকান বন্ড এবং ডলারের দাম ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছিল।
ওয়াল স্ট্রিটের ব্রোকারেজ ফার্মগুলির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবারও ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজে সূচক আট শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে নাসডাক বেড়েছে ১২ শতাংশ। গত ২৪ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ২০০১ সালের ৩ জানুয়ারির পর আর কখনই ১২ শতাংশ চড়েনি নাসডাক। এক দিনের নিরিখে তৃতীয় সর্বোচ্চ সীমায় ওঠার রেকর্ড করেছে এই স্টকের সূচক।
একই চিত্র দেখা গেছে এসঅ্যান্ডপি ৫০০-তে। বুধবার এই মার্কিন শেয়ার সূচকটি সাড়ে নয় শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ২০০৮ সালের পর এটিই তাদের সেরা পারফরম্যান্স।
এর ফলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগে উঠেছে যে, তিনি অর্থনীতির সঙ্গে একটি বিপরীত ‘পাম্প অ্যান্ড ডাম্প’ পরিকল্পনা খেলেছেন; দাম আবার বাড়ার আগে কেবল স্টকের দাম কমিয়ে কেবল সেগুলি কিনে নেয়ার জন্য। সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন