সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের রিসার্চ ডিরেক্টর খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, এবারের বন্যায় সরকারি খাতের চাইতে বেসরকারি খাত অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৫৩ শতাংশ। ব্যক্তি খাতের এ ক্ষয়ক্ষতি ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। তাই সামনের দিনে দুর্যোগে সহযোগিতার যে কাঠামো তাতে পরিবর্তন আনতে হবে।
রোববার (৬ অক্টোবর) সিপিডি কার্যালয়ে পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এবারের বন্যা প্রকৃতিগতভাবে ভিন্ন ছিল। বন্যা থেমে গেলেও পানি নামছিল না। সচরাচর যেসব অঞ্চল প্লাবিত হয়, এবারের বন্যায় সে সবের বাইরের অঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। বাংলাদেশ ভবিষ্যতে এমন আরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হবে- তেমনটা ভেবেই আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলা কার্যক্রম সাজাতে হবে।
তিনি বলেন, বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পর সাধারণত সরকারি ক্রেডিট থেকে একটা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা সরকারি খাতেই করা হয়। কিন্তু আগামীতে বেসরকারি খাতেও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা তৈরি কররে হবে। আর এ ক্রেডিট সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে অনেক বেশি বিজ্ঞান মন্সকতার দরকার রয়েছে। আমরা মনে করি দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে সরকারের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকা দরকার। তাদের কাজ হবে দুর্যোগের ক্ষতি থেকে যেন মানুষ বেরিয়ে আসতে পারেন তেমন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।
বক্তব্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যা জিডিপির দশমিক ২৬ শতাংশ। এরমধ্যে কৃষি ও বন খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা।
ফাহমিদা খাতুন আরো বলেন, অবকাঠামো খাতে ৪ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা ও ঘরবাড়িতে ২ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা হিসাবে নোয়াখালীতে বেশী ক্ষতি হয়েছে। এ জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে কুমিল্লা জেলা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতার ঘাটতি ছিল। এ কার্যক্রমে জনপ্রতিনিধি থাকা দরকার ছিল কি না তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কোনো ব্যক্তি একাধিকবার ত্রাণ পেয়েছেন, আবার অনেকেই পাননি।