কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে দূরপাল্লার গণপরিবহন। বেশি ভাড়া গুনতে হলেও স্বস্তিতে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।
সোমবার (২৪ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে যাত্রীদের স্বস্তির কথা জানা যায়।
পরিবার নিয়ে কিশোরগঞ্জে যাবেন ব্যবসায়ী জুনায়েদ হোসেন। তিনি বলেন, দূরপাল্লার পরিবহন চলার নির্দেশে যাত্রীদের থেকে বেশি উপকৃত হবে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তাদের কথা (পরিবহন শ্রমিকদের) চিন্তা করে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের তো খেয়ে-পড়ে চলতে হবে। এক হিসেবে এই সিদ্ধান্ত ভালো। অন্যদিকে মহামারিকালে আরও একমাস পরে দূরপাল্লার পরিবহন চালু হলে ভালো হতো। দূরপাল্লার পরিবহনে দুই সিটে একজন করে যাত্রী যাতায়াত করবে, এই যাতায়াত সুরক্ষিত মনে হচ্ছে। এতে করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল একাধিক যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ থাকায় ভেঙে ভেঙে যাতায়াত করতে হয়েছে আমাদের। আর এই যাত্রায় পোহাতে হয়েছে অসহনীয় ভোগান্তি। দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচলের সিদ্ধান্ত ভোগান্তি কমবে আমাদের। বাড়তি ভাড়া গুনতে হলেও স্বস্তিতে যাতায়াত করা যাবে। দুই সিটে একজন যাতায়াত করলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকবে। এর ফলে নিশ্চিন্তে যাতায়াত করা যাবে।
মহাখালী এনা পরিবহন কাউন্টার মাস্টার শহিদুল ইসলাম বলেন, দূরপাল্লার পরিবহন চলাচলের নির্দেশনা প্রথম দিন হওয়ায় যাত্রীদের চাপ কম। সকালবেলায় যাত্রীদের একটু চাপ ছিল। দুপুরে যাত্রীদের চাপ নেই বললেই চলে। যেহেতু অফিস-আদালত ঈদের ছুটিতে আগেই খুলে ফেলেছে। ঢাকায় অনেক মানুষ আগেই ভেঙে ভেঙে চলে এসেছেন। এখন ধীরে ধীরে মানুষ ঢাকায় আসছেন। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি যাত্রীদের জন্য ভালো সার্ভিস দেওয়ার।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রতিটি বাসে দুই সিটে একজন করে যাত্রী যাতায়াত করছেন। এতে যাত্রীরাও খুশি, আমরাও খুশি। হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে এবং মাস্ক পরিধান করিয়ে যাত্রীদের নিয়ে যাচ্ছি।
এর আগে রোববার (২৩ মে) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচলের জন্য চার দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে- কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে উল্লিখিত মোট আসন সংখ্যার অর্ধেকের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না, কোনোভাবেই বিদ্যমান ভাড়ার ৬০ শতাংশের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না, ট্রিপের শুরু ও শেষে জীবাণুনাশক দিয়ে গাড়ি জীবাণুমুক্ত করতে হবে এবং পরিবহন সংশ্লিষ্ট মোটরযান চালক, অন্যান্য শ্রমিক কর্মচারী ও যাত্রীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
বাস মালিক ও শ্রমিকদের জন্য একই ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।