১৯৮২ সাল থেকে প্রতিবছর এশিয়া কাপ হকিতে খেলে আসছিল বাংলাদেশ। এএইচএফ কাপ হকির ফাইনালে উঠতে পারলে সেই ধারাটা রক্ষা হতো। শুক্রবার জাকার্তায় সেমিফাইনালে ওমানের কাছে ৫-৪ গোলের পরাজয়ে স্বপ্ন ভেঙে যায় বাংলাদেশ হকি দলের। ৪৩ বছর পর এশিয়ার মঞ্চে নেই পুস্কর খিসা মিমোরা। হকিতে ভরাডুবির জন্য ক্রীড়াঙ্গনে বইছে সমালোচনার ঝড়। হকি-সংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা এএইচএফ কাপ হকির জন্য সঠিক পরিকল্পনা ছিল না বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের। কারও কারও মত ওমান যেখানে ১৫ ধাপ এগিয়েছে, বাংলাদেশ সেখানে অনেক পিছিয়েছে।
হকিতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলো ওমান। সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দলটির বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যাটা বেশিই ছিল। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ায় এএইচএফ কাপে এই ওমানের খেলা দেখে বিস্মিত সবাই। গতির সঙ্গে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত স্কিলের সামনে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা ছিলেন অসহায়।
সেই অসহায়ত্বের কথা বলতে গিয়ে এক খেলোয়াড় তুলে ধরলেন দুই দেশের হকির পার্থক্য, ‘বাংলাদেশ এশিয়া কাপ খেলবে না, এটা কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না। ওমান অনেক এগিয়ে গেছে। ওদের হকির প্রেসিডেন্ট হলেন দেশের রাজার ছেলে। আর ওমানে প্রিমিয়ার ডিভিশনের সাতটি ক্লাবের টার্ফ আছে। প্রতিটি শহরের নামে ওদের টার্ফ আছে। তারা হকিকে এখন অন্যভাবে নিচ্ছে। আপনি মনে রাইখেন পরবর্তী বিশ্বকাপের আয়োজক হবে ওমান।’
বাংলাদেশের ক্লাব পর্যায়ে কোনো দলের টার্ফ নেই। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে লিগ এবং বিভিন্ন টুর্নামেন্টের খেলাগুলো হয়। এর বাইরে সাভার বিকেএসপি, দিনাজপুর বিকেএসপি, বাংলাদেশ আর্মি এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে টার্ফ রয়েছে। কিন্তু হকির টার্ফেই দুই দেশের মধ্যে পার্থক্য মেলাতে চান না ওই খেলোয়াড়। তাঁর মতে পরিকল্পনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে, ‘১৯৯৬ সালের আগে একটা টার্ফ ছিল বিকেএসপির। তখনও বাংলাদেশ খেলত এবং ভালো রেজাল্ট করত। আসলে মাঠ কিংবা টার্ফ কোনো ব্যাপার না। বড় হচ্ছে পরিকল্পনা। আমাদের পরিকল্পনায় আগায়নি।’
এই টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার পেছনে অনেকেই সামনে এনেছেন অভিজ্ঞ রাসেল মাহমুদ জিমিকে না রাখা। এএইচএফ কাপের ফিটনেস টেস্টে ৫০ জনের বেশি খেলোয়াড় ডেকেছিল ফেডারেশন। সেই তালিকায় রাখা হয়নি জিমিকে। এটা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হলেও তাতে কান দেয়নি হকি ফেডারেশন।