হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে দিগন্ত দাস। বছর পঁচিশের এই যুবকের সংসারে আছেন প্রতিবন্ধী মা-বাবা। জীবিকার সন্ধানে প্রতিদিন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হতে হয় দিগন্তকে। শনিবার বিকেলে রিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় সড়ক থেকে কুড়িয়ে পান পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণের হার। সেটি মূল মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জমা রাখেন রিকশার মালিকের কাছে। অবশেষে পরদিন রোববার সেই হার মূল মালিকের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন দিগন্ত।
দিগন্ত দাস ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া গ্রামের গুরুপদ দাসের ছেলে। তাঁর মা-বাবা দু’জনই প্রতিবন্ধী। শহরের আড়পাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে তাদের নিয়েই থাকেন দিগন্ত। তিনি বলেন, শনিবার বিকেল ৫টার দিকে রিকশা চালিয়ে শহরের জনতা ব্যাংক মোড় দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সড়কে একটি সোনার হার পড়ে থাকতে দেখেন। সেটি হাতে নিয়ে আশপাশের কয়েকজনকে জানান। পরে সন্ধ্যার পর তাঁর রিকশার মালিক নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের কাছে জমা রাখেন। পরদিন শহরে হার হারানোর বিষয়ে মাইকিং শুনে মালিককে শনাক্ত করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। হারের মালিক খুশি হয়ে তাঁকে একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছেন।
পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণের হারটি ছিল পৌর এলাকার হেলায় গ্রামের নজরুল ইসলামের প্রবাসী ছেলে রাশেদ হোসেনের স্ত্রীর গলায়। রাশেদ বলেন, শনিবার বিকেল ৪টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অসাবধানে শহরের কোথাও হারটি পড়ে যায়। বাড়িতে আসার পর বিষয়টি টের পান তারা। পরে শহরের নানা স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। রোববার শহরে এ নিয়ে মাইকিং করেন। রিকশাচালক দিগন্ত তাঁকে হার পাওয়ার কথা জানান। এদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার হারটি বুঝিয়ে দেন দিগন্ত। তাঁর বিরল সততায় মুগ্ধ হয়ে মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছেন।
দিগন্তের প্রশংসা করে রিকশার মালিক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘মূল্যবান সোনার হারটি পেয়ে তিনি প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়ার জন্য আমার কাছে জমা রেখেছিলেন। এ যুগে এমন সৎ মানুষ প্রায় দেখাই যায় না। সততার জন্য তাঁকে স্যালুট জানাই।’