জনসচেতনতা তৈরি করতে শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে কর নিয়ে পড়াশোনা চালুর পক্ষে মত দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেছেন, করের বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তকে আসুক। শিশুরা ছোটবেলা থেকেই জানুক কর কী, কর দেশের কী কাজে লাগে। একটু অ্যাডভান্স লেভেলে কর-সংক্রান্ত অঙ্কও থাকবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে রিটায়ার্ড ট্যাক্স অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। সবার জন্য কর-সংক্রান্ত শিক্ষা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কর নিয়ে জানাশোনা না থাকলে, করদাতারা সচেতন হয় না। শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে কর নিয়ে পড়াশোনা চালু করা হবে। তাতে শিশুরা ছোটবেলা থেকেই জানবে কর কী, এটি দেশের কী কাজে লাগে। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে কর নিয়ে গণিত তথা অঙ্ক থাকবে।
আবদুর রহমান খান বলেন, ১ কোটি ৪৫ লাখ টিআইএনধারীর মধ্যে মাত্র ৪৫ লাখ রিটার্ন জমা দেন। কোনো জবাবদিহি নেই, কোনো নোটিশ নেই, কোনো অ্যাসেসমেন্ট নেই। এ জন্য রিটার্ন জমাও কম। কর আদায়ে ভুল পথ অনুসরণ করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আগে নীতিকে খুব আক্রমণাত্মকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এনবিআরকে কর আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হতো, ধরে নেওয়া হতো, তা টেবিলে বসেই পাওয়া যাবে। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, যারা রিটার্ন জমা দিয়েছেন তাদের দুই-তৃতীয়াংশই নন-ট্যাক্সেবল বা করযোগ্য নয়। অনলাইনের ১৫ লাখ রিটার্নের মধ্যে ১০ লাখই শূন্য রিটার্ন। কাগজে রিটার্নেও একই চিত্র।
এনবিআর শিগগির পুরোপুরি অনলাইন রিটার্নে যাবে– এমন তথ্য দিয়ে আব্দুর রহমান খান বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে অনলাইন রিটার্ন শতভাগ আবশ্যিক করে চালু হয়ে যাবে। এখনও প্রতিদিন তিন হাজার, সাড়ে তিন হাজার করে রিটার্ন জমা পড়ছে। নতুন করদাতারা নিবন্ধন নিচ্ছে। তারা রিটার্ন দিচ্ছে, তাদের জন্য কোনো জরিমানা নেই।
সভায় এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, মোট ভাড়া মূল্যের ভিত্তিতে বাড়িভাড়া আয় পরিগণনা ও সূত্র পরিহার করতে হবে। এ-সংক্রান্ত ধারাটি পুনর্গঠিত করতে হবে।
এনবিআরের আরেক সাবেক সদস্য অপূর্ব কান্তি দাস বলেন, বর্তমানে এলাকাভিত্তিক একটি ন্যূনতম কর আছে। কোথাও ২ হাজার, কোথাও ৫ হাজার। এটার একটা সমস্যা আছে। কেউ ঢাকায় চাকরি করেন; কিন্তু থাকেন অন্য কোনো জেলায়। পুলিশের লোকদের অনেক সমস্যা হয়। এখানে স্ল্যাব না রেখে, এটি নির্দিষ্ট করা উচিত।
সভায় এনজিও, শিল্প ও বাণিজ্য সংগঠন, ফাউন্ডেশন, সমবায় সমিতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কর অব্যাহতির আওতায় আনার প্রস্তাব দিয়েছে রিটায়ার্ড ট্যাক্স অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। তারা আয়কর আইনের বিভিন্ন ধারায় পরিবর্তন ও সংশোধন চেয়েছে।
Leave a comment