প্রথমবার পিএসজির সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল জয়ের সুযোগ। মৌসুমে ভালো শুরু না করেও শিরোপা জয়ের ফেবারিট দলে পরিণত হয়েছে প্যারিসের দলটি। লুইস এনরিকের দল রক্ষণ, মিডফিল্ড ও আক্রমণে দারুণ শক্তিশালী।
ইন্টার মিলান তিন মৌসুমের মধ্যে তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পা রেখেছে। এর আগে ম্যানসিটির বিপক্ষে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি দলটি। তবে এবার তারা অভিজ্ঞ। সিমোন ইনজাঘির ভিন্ন ধর্মী কৌশলে বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সার মতো দলকে পরাস্ত করে ফাইনালে আসা দলকে খাটো করার সুযোগ নেই।
দুই দলে আছেন বেশ কিছু ভালো ফুটবলার। পিএসজির ডি মারিয়া, কাভিচা খাভারস্তকেলিয়া, ভিতিনহা, মার্কুইনোস আছেন। ইন্টার মিলানে আছেন লওতারো মার্টিনেজ, ডিমার্কো, নিকোলাস বেরেল্লা ও হাকান কালাহলঘনুর মতো ফুটবলার।
দোন্নারুমা বনাম সমার: অনেকগুলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের কথাই স্মরণ করা যাবে, যেখানে গোলরক্ষকের ভুলে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে কিংবা গোলরক্ষক একহাতে শিরোপা জিতিয়েছেন। নিকট অতীতে লিভারপুলের কারিউসের ভুলে যাওয়ার মতো ভুল কিংবা ২০২২ মৌসুমে রিয়ালের থিবো কর্তোয়ার অসাধারণ সেভের কথা মনে পড়বে। চলতি মৌসুমে পিএসজির দোন্নারুমা গোলবারে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। আবার বার্সাকে হতাশ করে ইন্টারকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তোলার অন্যতম নায়ক যে দলটির গোলরক্ষক ইয়ান সমার। ফাইনালের নির্ধারক হতে পারেন তাদের কেউ একজন।
নুনো মেন্ডেস বনাম ডেঞ্জেল ডামফ্রিজ: ইন্টার কোচ সিমোন ইনজাঘির কৌশলে দলটির ডাচ ফুলব্যাক ডামফ্রিজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বার্সাকে হারাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। পাঁচ গোলে অবদান ছিল এই রাইট ব্যাকের। আবার চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে অফেন্সিভ ফুলব্যাক হলেন মেন্ডেস। পিএসজির এই লেফট ব্যাককে আটকানোর কৌশলও নিতে হবে ইন্টারের।
আশরাফ হাকিমি বনাম ডিমার্কো: ইন্টারের ডিফেন্ডার ফেদেরিক ডিমার্কোর জন্য ফাইনাল বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। বার্সার লামিনে ইয়ামালকে আটকাতে তার নাভিশ্বাস উঠেছিল। ব্যর্থই হয়েছিলেন তিনি। পিএসজির বিপক্ষে তার চ্যালেঞ্জ আবার ডাবল। বর্তমান বিশ্বের সেরা রাইট ব্যাক আশরাফ হাকিমিতে আটকাতে হবে। কারণ উইঙ্গ ধরে উপরে উঠে আসেন তিনি। আবার পিএসজির লেফট উইঙ্গে খেলা উসমান ডেম্বেলেকে রুখতে হবে।
জোয়াও নেভাস বনাম নিকোলাস বেরেল্লা: ইন্টার ম্যাচের আগে বার্সার ইয়ামাল বলেছিলেন, তিনি ইন্টারের বেরেল্লার খেলা দেখান। তাকে খুবই ভালো মানের মিডফিল্ডার মনে করেন। ইন্টারের সিস্টেমে বেরেল্লা ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করেন। ফাইনালেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন। আবার পিএসজির ম্যাচের গতি বাড়বে নাকি কমবে তা নিয়ন্ত্রণ করেন জোয়াও নেভাস। ফাইনালে এই দুই মিডফিল্ডারের একজন ম্যাচের নিয়ন্ত্রক হতে পারেন।
মার্কুইনোস বনাম লওতারো মার্টিনেজ: ইন্টার মিলান কাউন্টার অ্যাটাকে দারুণ দক্ষ। বার্সার হাই লাইন ডিফেন্সের বিপক্ষে গতিময় মার্টিনেজ দারুণ কার্যকরী ছিলেন। গোল করেছিলেন তিনি। পেনাল্টিও আদায় করেছিলেন। পিএসজির বিপক্ষেও ইন্টারের লওতারোয় আলো থাকবে। তাকে আটকানোর ভার সামলাতে হবে মার্কুইনোসের। ফাইনালে জমতে পারে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ও আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের লড়াই।
খাভারস্তকেলিয়া বনাম পাভার্ড: কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে ফ্রান্স ফুলব্যাক বেঞ্জামিন পাভার্ডকে পায়নি ইন্টার মিলান। যে কারণে দলটি কিছুটা ভুগেও ছিল। তবে ফাইনালে পিএসজির সাবেক নাপোলি তারকা খাভারস্তকেলিয়াকে আটকানোর ভার নিতে হবে তাকে। অফেন্সিভেও দারুণ কার্যকরী বিশ্বকাপ জয়ী পাভার্ড।