সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, পুলিশ সংঘটিত হয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করলে ব্যারাকে ফেরত যাবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সকলের সহযোগিতায় আমরা দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই। তবে যারা অপকর্ম করেছে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার দুপুরে খুলনা শহীদ শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে তিনি খুলনা বিভাগীয় ও জেলার শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সার্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।
তিনি বলেন, দেশে অরাজক একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী নামানো হয়। ৫ আগস্ট ও তার পরবর্তী সময় আরো একটু ভিন্ন। এখানে অনেক ধরনের অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় লুটপাট হয়েছে, অগ্নিসংযোগ হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীর ওপর আক্রমণ হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর সংখ্যা দুই লাখ। এত বড়সংখ্যক পুলিশবাহিনী যখন অকার্যকর হয়ে গিয়েছিল তখন এটাকে কার্যকর করা সেনাবাহিনীর জন্য দূরূহ হয়ে পড়েছিল। তবে আমরা সুন্দরভাবে এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি।
সেনা প্রধান আরও বলেন, খুলনা বিভাগের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। যা একেবারই স্বাভাবিক। অর্থাৎ স্বাভাবিক সময়ে যে অপরাধ সংঘটিত হয় এখন সেটাও হচ্ছে না। তবে এ নিয়ে আত্মতুষ্টির কোনো কারণ নেই। আমাদের আরো ভালোভাবে কাজ করতে হবে। পুলিশকে আরো সংঘটিত করতে হবে। খুব শিগগিরই পরিস্থিতি আরো স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমরা তা নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে সকল নিয়মিত বাহিনী সন্ত্রাস দমনে অভিযান পরিচালনা করবে।
সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয় তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ২০টি জেলায় ৩০টির মত সংখ্যালঘুবিষয়ক অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশই লুটপাট, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ। যার অধিকাংশই রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট।
এসময় তিনি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাক। তবে কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ যেন তারা না করে। তারা বুঝবেন জনগণের এখন দাবিটা কি? জনগণ যদি অরক্ষিত থাকে, যদি কোনো অশান্তি বিরাজ করে- আমি নিশ্চিত ওনারা সেই রাজনীতি করেন না। সে-টা কোনো দেশের রাজনীতি হবে না। সকলে আমাদের সহযোগিতা করলে আমরা অবশ্যই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসতে পারব। এই দেশ হবে সব ধর্মীয় মানুষের নিরাপদ স্থান। সেই লক্ষ্যে সকলে মিলে কাজ করতে হবে।