প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরই হবে এমন কথা বলেননি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, ভালো মন্দ না শুনে অনেকে হেডলাইন দিয়ে দিচ্ছে। পুরো বিষয়টি ক্লিয়ার করা হয়েছে, চার বছরের কথা বলা হয়নি। চার বছর রেফারেন্স আসছে যে, কারও কারও ডিমান্ড ছিল পার্লামেন্টের মেয়াদ চার বছর হোক। সেই আলোকে একটা নির্বাচিত সরকারের ক্ষেত্রে এই কথা আসছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষেত্রে এটা বলা হয়নি।
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর কিংবা তারও কম হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের (কপ২৯) ফাঁকে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিস্তারিত জানান প্রেস সচিব।
এই প্রসঙ্গে প্রেস সচিব আরও বলেন, পুরো বিষয়টা ক্লিয়ার করতে হবে। পুরো ইন্টারভিউটা আপনারা (গণমাধ্যম কর্মী) ভালোভাবে শুনেন। ইন্টারভিউতে তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) কি বলেছেন? সংবিধান নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে পার্লামেন্টের ডিউরেশন চার বছরে আনা হোক। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কথাটা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ প্রসঙ্গে তিনি এটা বলেননি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যম সংস্কার কমিটির কয়েক সদস্যের অতীত ভূমিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপ প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, যাদের কমিটিতে নেওয়া হয়েছে তাদের সলিড ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে। আমরা যে কাঠামোগত পরিবর্তন চাচ্ছি, তাতে আশাবাদী তারা ভালো করবেন।
অপর প্রশ্নের জবাবে জেনেভায় আইন উপদেষ্টাকে হেনস্থার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, কিছু সমস্যার সমাধান একদিনে হয় না। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছি। আরও বলবো, সমাধানের চেষ্টা চলছে। আশা করি আশু সমাধান হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের বিষয়ে টিআইবির অবজারভেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে বলা হয়, আমরা চেষ্টা করছি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার। আমরা যেগুলো মনিটরিং করছি সেগুলোর দাম কমছে। মাইনোরিটি রাইডের বিষয়ে আমরা খুবই সচেতন। ক্রাইমের পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে আইনশৃঙ্খলা ভালো হচ্ছে। যাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাদের ট্রেক রেকর্ড ভালো বলেই নেওয়া হচ্ছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, খুব শিগগিরই নির্বাচন কমিশনারের নাম প্রকাশ করা হবে।
পৃথক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধন কমিশন ইন্ডিপেন্ডেন্ট কমিশন। ৩১ ডিসেম্বর তারা রিপোর্ট দেবেন। এরপর আমরা সব রাজনৈতিক দল, কমিউনিটির সঙ্গে বসবো। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আরব আমিরাতে কেউ এখনো জেলে আছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয়ে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, অনেক সাংবাদিকদের দলীয় কর্মীতে পরিণত করেছিল। তারা কার্ড ব্যবহার করে তদবির করছিলেন অনেকেই। যাদের কার্ড বাতিল করা হয়েছে তারা চাইলে আবারও আবেদন করতে পারেন।
ঢালাও মামলার বিষয়ে বলা হয়, মামলা দেওয়া ভুক্তভোগীর অধিকার। তবে যার বিরুদ্ধে কোনো এভিডেন্স নাই তার বিরুদ্ধে যাতে মামলা দেওয়া না হয়। পুলিশকে অর্ডার দেওয়া হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে কোনো এভিডেন্স নাই দ্রুত তাদের নাম যেন বাতিল করা হয়।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।