প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা বাড়াতে অনেকেই আগ্রহী হন। তবে এজন্য শুধু মাংসের ওপর নির্ভর করতে না চাইলে বেছে নেওয়া যেতে পারে উদ্ভিজ্জ উৎস।
আর প্রোটিনের উদ্ভিজ্জ উৎসের সেরা একটি খাবার হল তোফু।তোফু বলতে যা বোঝায়সয়া দিয়ে তৈরি এই খাবার তৈরিতে ব্যবহার হয়- সয়াবিন, পানি এবং কোয়াগুলান্টস নামের একটি উপাদান, যা অন্য দুটি উপাদানকে একত্রিত করে রাখতে পারে।
এই তথ্য জানিয়ে হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিংয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ’য়ের ক্ষণ্ডকালিন অধ্যাপক ও পুষ্টিবিদ টেরেসা ফুং আরও বলেন, “চীন খাবারের উদ্ভোব হলেও সারা বিশ্বেই এখন খাবারটি পরিচিত।”বেইক, গ্রিল, হালকা ভেজে বা সেদ্ধ করে তোফু খাওয়া যায়।
পুষ্টি উপাদান
প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও সেলেনিয়াম’য়ের উৎকৃষ্ট উৎস। তবে প্রতিষ্ঠানের ভিন্নতার ওপর পুষ্টি পরিমাণের রকমফের হতে পারে। অন্যান্য প্রোটিনের উৎসের চাইতে তোফুতে ক্যালরির পরিমাণ বেশি।এছাড়া চর্বির পরিমাণ বেশি হলেও সেগুলো সবই হৃদস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী পলিআনস্যাচুরেইটেড ধর্মী।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সাবধানতা
স্বাস্থ্যকর হলেও তোফুর অকারিতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রাণীর ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে, এই খাবার থেকে নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সার হতে পারে।কারণ সয়া থেকে তৈরি পণ্যতে থাকা কিছু উপাদানের সাথে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মিল আছে। আর কিছু ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে ইস্ট্রোজেনের প্রয়োজন হয়।“তারপরও পুষ্টি উপাদানের দিক বিবেচনা করে এবং ভিটামিন ও খনিজের চমৎকার উৎস হিসেবে তোফু বেছে নেওয়াটা উপকারী”- বলেন টেরেসা ফুং।“কারণ সুস্থ খাকতে পুষ্টিকর খাবার বেছে নিতে হয়। আর ক্যান্সারের বিষয়টি নিয়ে জোড়ালো কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি”- মন্তব্য করেন এই পুষ্টিবিদ।
তাছাড়া মানব শরীরে এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি।নানান ধরনের তোফুসাধাণত তিন থেকে চার ধরনের তোফু বাজারে পাওয়া যায়।
সিল্কেন তোফু: এটা তোফুর সবচেয়ে নরম প্রকৃতি। সাধারণ ক্রিম-ভিত্তিক খাবারে ব্যবহার হয়।
মাঝারি বা মিডিয়াম তোফু: সিল্কেন’য়ের চাইতে একটু শক্ত তবে নরমই থাকে। যেসব খাবারে আকার ধরে রাখার প্রয়োজন নেই সেসবে ব্যবহার করা যায়।
শক্ত বা ফার্ম তোফু: শক্ত ছোট ছোট টুকরা আকারে পাওয়া যায়। এই ধরনের তোফু কাটলেও আকার ঠিক থাকে।
অতিরিক্ত শক্ত বা এক্সট্রা ফার্ম তোফু: এই তোফুগুলো সরাসরি ভেজে, গিল্ড করে খাওয়া যায়।
তোফুর রেসিপি
তোফু এয়ারফ্রায়ারে রান্না করে বা গ্রিল্ড করে কিংবা হালকা তেলে ভেজে যে কোনো সালাদে ব্যবহার করা যায়।
শক্ত তোফু টুকরা করে সুপের মধ্যে দিয়ে কিছু ফুটিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়া নানান মসলা দিয়ে মেরিনেইট করে রেখে রান্না বা পুড়িয়ে খাওয়া সম্ভব।
ওভেনে বেইক করে, প্যানে অল্প তেলে হালকা ভেজে, ফ্রায়ারে ফ্রাই করে বা গ্রিল্ড- রান্নার ভিন্নতায় তোফুর স্বাদও পরিবর্তিত হয়।