সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা জানেন ফিলিস্তিনে কী হচ্ছে। সেখানে যেভাবে গণহত্যা চালানো হচ্ছে, নারী শিশু কাউকে রেহাই দিচ্ছে না। আমি যেখানেই কথা বলছি, সেখানে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। ফিলিস্তিনিরা আরব ভূখণ্ডে তাদের জায়গা পাবে। এটা তাদের অধিকার। এ অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। সেই অধিকার তাদের দিতে হবে।
আজ (বুধবার) দুপুরে রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে ২০২৪ সালের হজ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলেন। পাশাপাশি হজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন তিনি তৈরি করে দিয়ে গেছেন। এ দেশে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে সকলে যেন সহজভাবে ধর্ম পালন করতে পারে, সে ব্যবস্থাটাও তিনি করে দিয়ে গেছেন। বিশ্ব ইজতেমা কোন দেশে হবে সেটা নিয়ে কিন্তু একটা ভোটাভুটি ছিল। শেখ মুজিবের নেতৃত্বে সেখানে বাংলাদেশ জয়ী হয়েছিল। তিনি জায়গা দিয়ে যান।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ যদি সকল মুসলিম দেশ এক হয়ে একযোগে কাজ করতে পারতো, তাহলে আমরা এ ব্যাপারে আরো অগ্রগামী হতে পারতাম। ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আমি একাই একমাত্র বোন। আমি সেখানে বলছি সকলে এক হোন। এ ধরনের অন্যায় অবিচার আমাদের ওপর যেন না হয়, সেজন্য সকলে সোচ্চার থাকবেন।
ইসলামের নামে কিছু লোক জঙ্গিবাদী কার্যক্রম করে মুসলমানদের বদনাম দিয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হজযাত্রীদের সুবিধার জন্য আশকোনা হজ ক্যাম্প এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে একটি আন্ডারপাস করে দেওয়া হবে। এতে হজযাত্রীদের সুবিধা আরও বাড়বে।
বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সৌদি আরবের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, ১৯৮৪ সালে তিনি প্রথম ওমরাহ করেন এবং ১৯৮৫ সালে প্রথম হজ করেন। প্রতিবারই গিয়ে যে যে সমস্যা দেখেছেন সেটা সৌদি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন এবং তারা এসব বিষয়ে তাকে গুরুত্ব দিয়েছে।
হজযাত্রীদের জন্য তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জেদ্দা বিমানবন্দরে আমরা ছাউনি ভাড়া নিয়েছি। আমি দেখেছি, আগে সেখানে কষ্ট হতো। সরকারে এসে আমি আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করি। এখন আর জেদ্দা বিমানবন্দরে ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধর্মবিষয়ক সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।
আলোচনা সভা শেষে হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।