পৌষের শেষ দিনে এসে আবারও মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে পঞ্চগড়। এক দিনের ব্যবধানে উত্তরের জেলাটিতে তাপমাত্রা কমেছে চার ডিগ্রি। এ নিয়ে চলতি শীত মৌসুমে পঞ্চমবারের মতো শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ল পঞ্চগড়।
চলতি মৌসুমে আগে চার বার শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছিল উত্তরের জেলাটি। কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে। গতকাল সকাল ছয়টায় সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। আজ সকালে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তাপমাত্রা আট থেকে দশ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটিকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে হয় অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। সে অনুযায়ী আজ সকালে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে পঞ্চগড়ে।
তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ছয়টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা গতকাল সকাল ছয়টায় ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি এবং সকাল নয়টায় ১২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
জিতেন্দ্র নাথের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা কমেছে ৪ দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে পৌষের শেষ দিনে কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জনজীবন। ঘন কুয়াশায় আবৃত হয়ে পড়েছে চারদিক। শীতার্ত মানুষেরা তীব্র কষ্টে দিন পার করছেন। বিশেষ করে দিনমজুর, চা ও পাথর শ্রমিকদের ভোগান্তির অন্ত নেই। তীব্র শীতে কাজে যেতে কষ্ট হচ্ছে তাদের। উপায় না পেয়ে শীত উপেক্ষা করেই কাজে যাচ্ছেন তারা। শীতার্ত ও ছিন্নমূল মানুষরাও অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
শীতের কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি সমস্যায় পড়েছেন। প্রতিনিয়তই সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ গিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন মানুষ। প্রতিনিয়ত হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, হিমালয় পর্বতের কাছাকাছি হওয়ায় উত্তর- পশ্চিমাঞ্চল থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ার কারণে তীব্র ঠান্ডা অনুভুত হচ্ছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। আজ সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৯ শতাংশ। ফলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়। সামনের দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।