ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটা সত্ত্বেও সরকারে যে থাকবে, তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা হবে। শুক্রবার নয়া দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনার পতনের পর প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েনের মধ্যে তার এ মন্তব্য এলো।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব রাজীব সিক্রির লেখা ‘স্ট্র্যাটেজিক কনানড্রামস: রিশেপিং ইন্ডিয়া’স ফরেন পলিসি’ বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নয়াদিল্লিভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন (ভিআইএফ)।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক উঠানামার মধ্য দিয়ে গেছে। আর সরকারে যে থাকে, তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখব, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এটা আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে। আর রাজনৈতিক পরিবর্তনে ….বিঘ্নিত হতে পারে। আর আমাদের সম্পর্কের বিষয়টিকে পারস্পরিক স্বার্থের প্রেক্ষাপট থেকে দেখতে হবে।’
হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রশ্ন ‘অনুমাননির্ভর’
শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ অনুরোধ জানালে ভারত কী জবাব দেবে, এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি শুধু বলেছেন, এই ধরনের অনুমাননির্ভর কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার রীতি নেই।
শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি কথা বলছিলেন।
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরদিন জয়শংকর দেশটির পার্লামেন্টে যে কথা বলেছিলেন তার পুনরাবৃত্তি করেন জয়সওয়াল। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট খুব সংক্ষিপ্ত নোটিশে শেখ হাসিনা তাকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দিতে অনুরোধ করেছিলেন। তাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে যে ধরনের প্রশ্ন করা হচ্ছে তা কল্পনাপ্রসূত।
বাংলাদেশে ভারতের দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত ভারতীয়রা তাদের দেশে ফিরে গেছেন। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে ভারত সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করবে।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশিদের শুধুমাত্র মেডিকেল ভিসার মতো জরুরি ক্ষেত্রে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ভিসা দেওয়া আবার শুরু হবে।