অলরাউন্ডারের পরিচয় শুধু ভালো বোলিংয়েই যে হয় না, সেটা জানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। জানেন বলেই বোলিংয়ের পর ব্যাটিংটাও করলেন দুর্দান্ত। খুররাজ শেহজাদের বলে যখন ৭৮ রান করে ড্রেসিংরুমে ফিরলেন তখন বাংলাদেশকে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ঘুঁরে দাঁড়ানোর মতো সংগ্রহ এনে দিয়েছেন। এর আগে বোলিংয়ে দশমবারের মতো ক্যারিয়ারে ৫ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ।
শুধু মিরাজকে কৃতিত্ব দিলে অবশ্য ভুল হবে। তার সঙ্গে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন লিটন দাসও। প্রথম টেস্টের ছন্দটাই দ্বিতীয় টেস্টে ধরে রেখেছেন লিটন। টানা দ্বিতীয় ইনিংসে ফিফটি তুলে নিয়েছেন তিনি।অথচ যখন ব্যাটিংয়ে নামলেন তখন বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।পাকিস্তানের দুই পেসার খুররম শেহজাদ ও মীর হামজার তোপে ২৫ রানেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এমন ধ্বংসস্তূপে সাকিব আল হাসানকে সঙ্গ দিতে মাঠে নামেন লিটন। কিন্তু দলীয় খাাতায় রান যোগ হওয়ার আগেই সাকিব ২ রানে ড্রেসিংরুমে ফেরেন।
সেখানে থেকে মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়ে বাংলাদেশকে কী দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনটাই না এনে দিলেন লিটন।
দুজনে মিলে সপ্তম উইকেটে ১৬৫ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশ ১০০ রান করতে পারবে কি না, তা নিয়েই শঙ্কা ছিল। সেই শঙ্কা কাটানোর পর পরে ফলোঅনও পেরিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৯৩ রান।
পাকিস্তানের বোলাদের ওপর চড়াও হয়ে দুর্দান্ত জুটিটার শুরু করেছিলেন মিরাজই। অন্য প্রান্তে ইনিংসের গোড়াপত্তন দেখেশুনে করেন লিটন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারও হাত খুলতে থাকেন। এতে করে দুই ব্যাটার খুররাম-হামজাদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে শাসন করতে থাকেন। দুজনে ফিফটি তুলে নেওয়ার পর সেঞ্চুরির পথেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের জুটি ভাঙতে না পেরে যখন হতাশ বাংলাদেশের বোলাররা ঠিক তখনই মিরাজ যেন নিজের ‘মৃত্যু’ ডেকে আনলেন। দলীয় ৫২তম ওভারের পঞ্চম বলে পেসার খুররমের হাতে একটা সহজ ক্যাচ তুলে দিলেন। এর সঙ্গে সঙ্গে তার ১২ চার ১ ছক্কায় সাজানো ৭৮ রানের ইনিংসটির মৃত্যু হয়।
মিরাজকে আউট করে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন খুররম। পরে তাসকিন আহমেদকে দ্রুত ফিরেছেন পাকিস্তানি এই পেসার। অন্যদিকে সঙ্গী হারা লিটন ৮৩ রানে অপরাজিত থেকে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তৃতীয় সেশন যখন শুরু করবেন তখন তার লক্ষ্য থাকবে ৯ চার ২ ছক্কার ইনিংসটিকে তিন অঙ্কে পূর্ণতা দেওয়ার। সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের স্কোরকেও বড় করার দায়িত্ব তার কাঁধেই থাকবে।