চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। তবে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সাড়ে ৩০ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ব্রাজিলে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, আর্জেন্টিনা, পোল্যান্ড ও মেক্সিকো। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৮২ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৭ লাখ ৩০ হাজার।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ হাজার ২৫২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে চার শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৭ লাখ ৩০ হাজার ২৮৯ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৮২ লাখ ২৭ হাজার ১৪ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ব্রাজিলে। গত ২৪ ঘণ্টায় লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ লাখ ৮৬ হাজার ৫০ জন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯২৩ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৬০ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ১ জনের।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩১ জন এবং মারা গেছেন ২ হাজার ৩৪২ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১৮৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ২০ হাজার ৬৮৩ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭৪ হাজার ৩৫২ জন এবং মারা গেছেন ২৬৪ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৫২ জন মারা গেছেন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৬৭ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২২ লাখ ৮৪ হাজার ৫৬৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫৭ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৫৩০ জন এবং মারা গেছেন ২৩৩ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজার ৬৯১ জন এবং মারা গেছেন ৪১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ হাজার ৩৬৮ জন এবং মারা গেছেন ১৮৩ জন।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ১৭১ জন এবং মারা গেছেন ৩২১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার ৮৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩০ জন মারা গেছেন। গত একদিনে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৫৬৮ জন এবং মারা গেছেন ২৬২ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৪০ হাজার ২১৮ জন এবং মারা গেছেন ১৮৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৯ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৬২০ জন এবং মারা গেছেন ২১০ জন।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৫০১ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ৮৭ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ৮২ জন, পোল্যান্ডে ৩০৭ জন, কানাডায় ১৫৪ জন, আর্জেন্টিনায় ৩১৮ জন, গ্রিসে ১১২ জন, হাঙ্গেরিতে ৮৮ জন, পেরুতে ১৮৬ জন এবং ভিয়েতনামে ২৮৬ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৫৭৩ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ৪৯৩ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
পিএসএন/এমআই