আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে চলমান চারটি বিসিএস পরীক্ষার জট নিরসনের পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। একইসঙ্গে পরীক্ষার ফল দ্রুত তৈরি করতে আধুনিক কাঠামো দাঁড় করানোর কাজও চলমান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কমিশনের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম।
কমিশনের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন গঠনের পর ৪৪তম বিসিএসের সাধারণ ও কারিগরি/পেশাগত ক্যাডারে মোট ৫ হাজার ৮৮৮ জনের মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে এর চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। আর ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী ৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার আবশ্যিক বিষয়সমূহের পরীক্ষা ৮ মে থেকে ১৯ মে এবং পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষা জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাশ্বের মোনেম বলেন, পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে কমিশন বিসিএস পরীক্ষার পদ্ধতি সংস্কারের জন্য অংশীজনদের সাথে কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মুদ্রণে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে প্রশ্নকর্তারা পিএসসিতে এসে প্রশ্ন প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করছেন।
কাজের অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, কমিশন গতবছরের ২৬ নভেম্বর থেকে এবছরের ২২ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৬টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের ১২২টি ক্যাটাগরির পদে ৩ হাজার ৭১২ জন প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে। ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ স্বচ্ছ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে ব্যবহৃত লিথোকোড ফর্মের ডিজাইন ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে সংস্কার আনা হয়েছে।
ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, উত্তরপত্র মূল্যায়নের স্বচ্ছতা ও বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে সার্কুলার পদ্ধতি চালু করা হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে কমিউনিটি বেসড ইনভিজিলেশন সিস্টেম এবং নেক্সট জেনারেশন আনসার স্ক্রিপ্ট ডিজাইন প্রণয়ন করা হবে। এছাড়া প্রক্সি পরীক্ষার্থীদের শনাক্ত করতে প্রার্থীদের থাম্বপ্রিন্ট সংগ্রহের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন পদ্ধতি নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে।
এসময় ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল বাতিল না করে আরও ১০ হাজার পরীক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ করার কারণ ব্যাখ্যা করেন কমিশনের সদস্য মো. সুজায়েত উল্যা। তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের তদন্ত করছে সিআইডি। অবৈধ সুবিধাভোগীরা শনাক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, সকলের পরীক্ষা বাতিল করলে বহু নির্দোষ পরীক্ষার্থীর মূল্যবান সাফল্য হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই, বঞ্চিতদের সুযোগ দিতে আরও সমসংখ্যক প্রার্থীকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। চূড়ান্ত নিয়োগ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে হবে, প্রিলিমিনারির নম্বর যোগ করা হবে না।
সিলেবাস পরিবর্তন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আরেক সদস্য ড. মো. নাজমুল আমীন মুজমদার বলেন, ৪৮তম বিসিএস (বিশেষ) হলে ৪৯তম বিসিএস থেকে সিলেবাস পরিবর্তন করা হবে এবং এ লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সিভিল সার্ভিসের সিলেবাস নিয়ে গবেষণা চলছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশনের অন্যান্য সদস্য ও সচিবালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।