বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে ভালো বোলিং করেন, এমন একজন বোলার থাকলেই বাংলাদেশ দলকে ধসিয়ে দেওয়া যায়! ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে প্রথম ছয় ব্যাটারের পাঁচজনই যেমন বাঁ-হাতি ছিলেন। ওই বাঁ-হাতিদের আকাশ দ্বীপ, অশ্বিনরা সহজ লক্ষ্য বস্তু বানিয়ে আউট করেছেন।
শুধু ভারত সিরিজে নয় বাঁ-হাতি ব্যাটারে ঠাসা ব্যাটিং অর্ডার জয় পাওয়া পাকিস্তান সিরিজেও বিশেষ দুই একজন বোলারের বিপক্ষে ধুঁকেছে। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভরাডুবির সিরিজেও বাঁ-হাতিদের বিপক্ষে সুবিধা আদায় করে নিয়েছিলেন লঙ্কান বোলাররা।ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টে ফিরে তাকালে দেখা যায়, টপ অর্ডারের চার ব্যাটারই ছিলেন বাঁ-হাতি। এর মধ্যে জাকির হাসান ও মুমিনুল হককে পরপর দুই বলে রাউন্ড দ্য উইকেটে কোণ তৈরি করে একই লেন্থে বল করে বোল্ড করেন ভারতীয় পেসার আকাশ দ্বীপ। তার আগে বাঁ-হাতি ওপেনার সাদমানকেও একই লেন্থে বল করে বোল্ড করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। নাজমুল শান্ত আউট হন অন্য ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ সিরাজের বলে।
ভারতের স্পিনার রবিশচন্দন অশ্বিন বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বরাবরই ভোগান। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি একাই ৬ উইকেট তুলে নেন। এর মধ্যে প্রথম ছয় ব্যাটারের চারজন অর্থাৎ সাদমান, মুমিনুল, সাকিব ও মুশফিক তার শিকার হন।এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে পেসার খুররম শাহজাদ টপ অর্ডারের বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপদে ফেলেন। বাংলাদেশের ১০ উইকেটে জয় পাওয়া ওই টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনি টপের ২ ব্যাটারকে তুলে নেন। দ্বিতীয় ইনিংসে এই খুররম আরও ভয়ঙ্কর ছিলেন। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৬ রানে ৬ উইকেট হারায়। যার মধ্যে ৪ বাঁ-হাতি সাদমান, জাকির, শান্ত ও সাকিবকে একাই তুলে নেন তিনি।
এর আগে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে বাঁ-হাতি ব্যাটারদের নিয়মিত বিপদে ফেলেন বিশ্ব ফার্নান্দো। প্রথম টেস্টে তিনি ৭ উইকেট নেন। যার ৩জন ছিলেন বাঁ-হাতি ব্যাটার। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনি বাঁ-হাতি ওপেনার জাকির হাসান, নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে তিনে নামা তাইজুল ইসলামের পর মুমিনুল ও সাকিবকে আউট করেন। তার তোপে প্রথম ইনিংসের বিপর্যয় দ্বিতীয় ইনিংসে কাটিয়ে উঠতে না পেরে হারে দল।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওপেনিংয়ে অবশ্য মাহমুদুল হাসান ছিলেন। যে কারণে টপে বাঁ-হাতি একজন কম ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনজুরির কারণে তার জায়গায় সাদমানকে নেওয়া হয়। চেন্নাই টেস্টেও ওপেনিংয়ে ছিলেন বাঁ-হাতি সাদমান। মূল এই বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ সুবিধা পেলেও বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প অবশ্য ভিন্ন সুরে কথা বলেছেন। চেন্নাই টেস্টে হারের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বোলারদের কথা চিন্তা করলে তারা সবাই এক, বাঁ-বাতি ব্যাটার। কিন্তু খেলার ধরনের দিক থেকে তারা সকলেই আলাদা। তাদের শক্তির জায়গা আলাদা এবং ভিন্ন লেন্থের বলে রানও করেছে। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত নই।’