ব্রাজিলের রিও গ্র্যান্ডে দো সুল রাজ্যে কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। স্থানীয় বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে সোমবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের রিও গ্র্যান্ডে দো সুলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের ১৩৬ জন থেকে বেড়ে ১৪৩ জনে পৌঁছেছে। রাজ্যে আরও নিখোঁজ রয়েছেন ১২৫ জন। রিও গ্র্যান্ডে দো সুলের সব নদ-নদীর পানি ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। দেশটির আবহাওয়া পরিষেবা সংস্থা মেটসুল চলমান এই পরিস্থিতিকে ‘‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’’ বলে অভিহিত করেছে।
প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবিলায় শনিবার সন্ধ্যার দিকে দেশটির সরকার ওই রাজ্যে জরুরি সহায়তা হিসেবে ২ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (১২ দশমিক ১ বিলিয়ন ব্রাজিলীয় রিয়েল) তহবিলের ঘোষণা দিয়েছে। বৃষ্টি-বন্যায় রাজ্যের ১০ কোটি ৯০ লাখ মানুষের অন্তত ৫ লাখ ৩৮ হাজার জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
শনিবার রিও গ্র্যান্ডে দো সুলের ফেডারেল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন বরাদ্দ থেকে ইতিমধ্যে ৬০ বিলিয়ন রিয়েলের বেশি রাজ্যের সরকারি তহবিলে দেওয়া হয়েছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেছেন, রাজ্যে যা ধ্বংস হয়ে গেছে তার সবকিছুই পুনরায় নির্মাণ করা হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা জানি, সবকিছু পুনরায় ফিরিয়ে পাওয়া যায় না। মায়েরা তাদের সন্তানদের হারিয়েছেন এবং শিশুরা তাদের মাকে হারিয়েছে।’’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃৃতিতে বলেছেন, তার নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন সহায়তা প্রদানের জন্য ব্রাজিল সরকারের সাথে যোগাযোগ করছে।
রোববার রিও গ্র্যান্ডে দো সুলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবারও বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাষ দিয়েছে সেখানকার আবহাওয়া সংস্থা। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে রাজ্যটিতে তুমুল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। তখন থেকে টানা বর্ষণ চলছে। রিও গ্র্যান্ডের রাজধানী পোর্তো আলেগ্রির কাছের গুয়াইবা হ্রদে পানি রেকর্ড মাত্রায় বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন।
গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও মেরু জলবায়ু অঞ্চলের মধ্যবর্তী একটি ভৌগোলিক সংযোগ স্থলে ব্রাজিলের রিও গ্র্যান্ডে দো সুলে রাজ্যের অবস্থান। যা তীব্র বৃষ্টি বা খরার সময়কালের সাথে মিলিয়ে বৈরী আবহাওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার এই বৈরী ধরণ সেখানে অত্যন্ত তীব্র হয়ে উঠছে বলে স্থানীয় বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন।