ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনকারী ইসরায়েলিদের ৭টি সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে ৩টি সেনা ফাঁড়ি এবং বাকি চারটি বেসামরিক সংস্থা। পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিনি জনগণকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার প্রতিবাদে এই পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রিটেনের সরকার।
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, পশ্চিম তীর বা গাজায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপন অবৈধ। তবে বছরের পর বছর ধরে আইনের তোয়াক্কা না করেই ইসরায়েলি বসতি স্থাপন চলছে পশ্চিম তীরে। কারণ, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে একটি বড় বাধা এই বসতি স্থাপনকারীরা। যে তিন সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ব্রিটেনের সরকার, সেগুলোর প্রত্যেকটি উগ্র ইহুদিবাদ সমর্থক।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কালো তালিকাভুক্ত ফাঁড়ি-সংস্থাগুলো পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে উগ্র ও কট্টরপন্থি ইহুদি বসতিস্থাপনকারীরা এবং এসব সংস্থা বা সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে বিগত কয়েক বছরে পশ্চিম তীরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গুরুতর নিষ্ঠুরতা ও অমানবিক এবং অপমানজনক কর্মকাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ রয়েছে।
পশ্চিম তীরের ইহুদিদের বিখ্যত ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ওদ ইউসেফ চাই ইয়েশিভা-ও রয়েছে ব্রিটেনের কালো তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলোর তালিকায়। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটির মূল কাজ পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব উস্কে দেওয়া।”
বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, “কিছু দিন আগে আমি পশ্চিম তীরে সফর করেছি। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রথম বৈদেশিক সফর ছিল এটি। সফরকালে আমি পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং ভয়াবহ যেসব সহিংসতার বিবরণ তারা আমাকে দিয়েছেন, তাতে রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো।”“এবং আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি যে এসব সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সরকার কখনও কোনো পদক্ষেপ নেয় না। সরকারের এই উদাসীনতা ও নির্লিপ্ততা এসব সংস্থাকে আরও বেশি নৃশংস করে তুলছে।”
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের রেকর্ড অনুসারে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে মোট ১ হাজার ৪০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্যও।