কয়েক দিন আগে মাটি কুপিয়ে সার দেওয়া হয়েছে। এখন গাছের গোড়া বেঁধে পানি সেচ দেওয়ার পালা। এরই মধ্যে ছোট-বড় গাছে এসেছে গোলাপের কুঁড়ি। কয়েক দিন পর পরিপূর্ণভাবে ফুটবে। তখন ক্ষেত থেকে তুলে বিক্রি করা যাবে। ভালো বিক্রির আশায় গোলাপ পরিচর্যা করছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান রাজু।
২৫ শতাংশ জমি নিয়ে গোলাপের বাগান মেহেদী হাসান রাজুর। তাঁর বাগানে লিংকন, পিঙ্ক, হলুদ কালারের গোলাপ রয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে ১৫ টাকা পিস দরে ৫ হাজার গোলাপের স্টিক বিক্রি করতে পারবেন– এমন আশা করছেন রাজু।
ঝিনাইদহ জেলায় বেশি উৎপাদন হয় গাঁদা ফুল। সঙ্গে গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, রজনীগন্ধাসহ অন্যান্য ফুলও চাষ করা হয়। এ সময় চাহিদা বেশি থাকায় সব রকম ফুলের দামও বেড়ে যায়। ফলে চাষিরা আশায় থাকেন এ সময়ের।
চলতি বছর জেলায় ৯২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের আবাদ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে মৌসুমে গোলাপ ক্ষেত পরিচর্যায় খরচ পড়ে এক লাখ টাকা। গাঁদা ফুল পরিচর্যায় খরচ হয় ৭০ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জেলায় গাঁদা ২৩২ হেক্টর, রজনীগন্ধা ৯৮ হেক্টর, গোলাপ ৩১ হেক্টর, জারবেরা ২০ হেক্টর, গ্লাডিওলাস ৮ হেক্টর, চন্দ্রমল্লিকা ফুল ২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল।
কোটচাঁদপুরের ইকড়া গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ মিন্টু জানান, এবার গাঁদা ফুলে প্রচুর কুঁড়ি এসেছে। বিজয় দিবসের আগে ক্ষেত থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করব। আশা করছি ভালোই লাভ হবে।
গান্না বাজারের ফুল ব্যবসায়ী দাউদ হোসেন জানান, গাঁদা ফুলের চাহিদার বড় একটা অংশ পূরণ করে ঝিনাইদহ জেলা।
এর মধ্যে বাসন্তী, লাল গাঁদার চাহিদা বেশি। বিজয় দিবস ঘিরে প্রতি ঝোপা গাঁদা ফুল অন্তত ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হবে আশা এই ব্যবসায়ীর।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-এ-নবী বলেন, এখন দিনে তাপমাত্রা বেশি, রাতে কম। এমন আবহাওয়ায় ফুলে ছত্রাকের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ৭ থেকে ১০ দিন পরপর ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করলে এ জাতীয় রোগ থেকে ফুল রক্ষা করা সম্ভব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, বিজয় দিবস ঘিরে স্থানীয় চাষিরাপুরো প্রস্তুতি নিয়েছেন। এখন সামান্যকিছু পরিচর্যা করলেই চলবে। পরিমিত
মাত্রায় সেচ, জৈব সার ও কিছু ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। এতে করে ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।