ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তোলপাড় নেটমাধ্যম। একইদিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে মারা হয়।
দেশের দুই বৃহৎ বিদ্যাপীঠে এ দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এ মুহূর্তে সংবাদের শিরোনামে।
ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর গণঅভ্যুত্থানে পাওয়া নতুন দেশেও কেন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটবে – এ প্রশ্ন নেটিজেনদের।
এদিকে ঢাবির ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
অন্যায়কারী বা দাগি আসামি হলেও এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার কারও নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি ওই ফেসবুক পোস্টে।
এছাড়া ঘটনা দুটিতে বুয়েটে রাতভর নির্যাতনে আবরার হত্যাকাণ্ডের কথাও স্মরণ করিয়ে দিলেন এ সমন্বয়ক।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, মানসিক ভারসাম্যহীন হোক, ‘চোর হোক অথবা দাগি আসামি, কাউকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার বা সাহস কোনো একজন ব্যক্তি কীভাবে পায়?মব জাস্টিসের নামে নরপশুর ন্যায় নির্মমতা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির এক্সামপল সেট হওয়া প্রয়োজন ৷’
তিনি আরও লেখেন, ‘কে কোথায় পড়ে, কি করে সেটা মুখ্য নয় ৷ অন্যায় সবসময় অন্যায় ৷ একটা জলজ্যান্ত মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে যাদের বুক একবারের জন্যও কাঁপে না তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকতে পারে না ৷’
এ সমন্বয়ক লেখেন, ‘মানুষটার শরীরটা দেখে বুয়েটের আবরারের কথা বারবার মনে পড়েছে ৷ সকল অন্যায়কারীর বিচার হোক ৷ নির্দোষ কেউ শাস্তি না পাক ৷ একবার যদি অন্যায়কারীরা কোনো সূত্র ধরে ছাড় পেয়ে যায় তবে তা পরবর্তী অসংখ্য অন্যায়ের প্রশ্রয় হিসেবে দৃষ্টান্ত তৈরি করে ৷ নতুন বাংলাদেশে সেই সুযোগ যেন কেউ না পায় ৷’
উল্লেখ্য, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদকে পেটানো হয়।
রাত ১০টা দিকে আশুলিয়ার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শামীম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
অন্যদিকে, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে আটক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। ওই ব্যক্তিকে কয়েক দফায় মারধরের পর রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।