মেহেদী হাসান মিরাজরা জ্যামাইকা থেকে সেন্ট কিটসে গেছেন উচ্ছ্বাস নিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বড় ব্যবধানে টেস্ট জয়ের সে আনন্দ ওয়ানডে সিরিজের টনিক। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ টেস্ট সিরিজ শেষে বলেছিলেন, টেস্টের সাফল্য সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভালো খেলতে আত্মবিশ্বাস দেবে। হয়তো তাই হবে। কারণ ভালো খেলার জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ছন্দের প্রয়োজন হয়।
সেই ছন্দ হাতে থাকায় সেন্ট কিটসে পৌঁছানোর পর থেকে খোশ মেজাজে আছেন ক্রিকেটাররা। তারা অনুশীলন করেছেন ব্যাটিংকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখে। তাসকিন আহমেদরাও ব্যাটিংয়ের পাঠ নিয়েছেন সিনিয়র সহকারী কোচ সালাউদ্দিনের কাছে। ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস শ্যাডো করে দেখিয়েছেন লিটন কুমার দাসদের। এ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার, ওয়ানডে সিরিজের আগে বাংলাদেশের সব মনোযোগ ব্যাটিংকেন্দ্রিক। কারণ মিরাজরা বোলিংটা ভালো করেন। জ্যামাইকার ফাস্ট কন্ডিশনে টেস্ট জিতে সে প্রমাণ দিয়েছেনও তারা। তবে জিততে হলে ব্যাটিংটাও যে ভালোভাবে করতে হবে, সে বোধটা ফিরে এসেছে দলে। যেখানে অনেক দিন ধরেই প্রচণ্ড ঘাটতি রয়েছে।
আফগানিস্তানের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারতে হয়েছে নিরপেক্ষ ভেন্যু শারজাহ স্টেডিয়ামে ওই ঘাটতির কারণেই। ভারত টেস্ট ও টি২০ সিরিজে উড়িয়ে দেওয়ার পেছনেও ছিল ব্যাটিং। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওয়ানডে সিরিজে ভালো খেলে ব্যাটিং ব্যর্থতার সে গল্প মুছে ফেলতে চায় বাংলাদেশ। সেন্ট কিটসে প্রথম ওয়ানডে থেকে নতুন গল্প লেখাতে চান মিরাজরা।
ক্রিকেটের তিন সংস্করণের মধ্যে ৫০ ওভারের গেমে মোটামুটি ভালো খেলে বাংলাদেশ। মিরাজদের কাছে এই সংস্করণটি খুবই প্রিয়। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে আশাবাদী হওয়াই যায়। যদিও এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সেরা দল খেলাতে পারছে না। মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয় চোটের কারণে দলে না থাকায় নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ মিলেছে বিকল্পদের। বিশেষ করে আফিফ হোসেনের জাতীয় দলে টিকে থাকার মিশন বলা যায়। তারা সাদা বলের ক্রিকেট খেলার মধ্যেই ছিলেন। গ্লোবাল টি২০ টুর্নামেন্ট খেলেছেন রংপুর রাইডার্সের হয়ে। গতকাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন তিনি।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে বাংলাদেশের এক দিনের এই ক্রিকেট সিরিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কারণে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাকিস্তান-আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় হাইব্রিড মডেলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে শেষ সিরিজ খেলছেন মিরাজরা। বছরের শেষ সিরিজটি জয় দিয়ে করা গেলে আইসিসির টুর্নামেন্টে আত্মবিশ্বাস দেবে। তাই সেন্ট কিটসের স্পোর্টিং কন্ডিশনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলে সিরিজের সবকটি ম্যাচ জিততে চায় বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ভেন্যুতে ফাস্ট বোলাররা ভালো করেন। এই কন্ডিশনে বাংলাদেশ যে তিনজন পেসার নিয়ে খেলবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সৌম্য সরকারকে চতুর্থ পেসার হিসেবে কাজে লাগাতে চেষ্টা করবেন অধিনায়ক। বাকি দুই স্পিনারের একজন অলরাউন্ডার কোটার মিরাজ। সে ক্ষেত্রে স্পিনার হিসেবে খেলতে পারেন বাঁহাতি নাসুম আহমেদ বা লেগি রিশাদ হোসেন। যদিও উইকেট নিতে না পারলে নাসুমকে টানা নাও খেলাতে পারেন কোচ।