ক্যারিয়ারের শুরুতে মুস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ার কাটার ছিল যেন এক রহস্যময় অস্ত্র। তার সেই জাদুকরী ডেলিভারিতে নাস্তানাবুদ হয়েছেন বিশ্বের বড় বড় ব্যাটাররা। তবে মাঠে প্রতিপক্ষকে ফাঁদে ফেলার মুস্তাফিজের দক্ষতা যতটা প্রশংসা কুড়িয়েছে, মাঠের বাইরে ইংরেজি ভাষা নিয়ে তার ভয় ততটাই ছিল আলোচনার বিষয়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিষয়টি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি। তবে ২০১৬ সালে আইপিএলে প্রথমবার খেলতে গিয়ে বিপাকে পড়েন বাঁহাতি এই পেসার। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছিলেন তিনি, যেখানে দলের কোচ ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান টম মুডি এবং অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে টম মুডি বলেন, ‘শুরুর দিকে মুস্তাফিজকে নিয়ে আমরা সত্যিই সমস্যায় পড়েছিলাম।’ ভাষাগত জটিলতা বোঝাতে গিয়ে মুডি উদাহরণ দেন, একবার ওয়ার্নার মাথার দিকে ইশারা করে বুঝাতে চেয়েছিলেন ‘বুদ্ধি খাটিয়ে বল করো’, কিন্তু মুস্তাফিজ সেটা বুঝেছিলেন ব্যাটারকে মাথার দিকে বাউন্সার দিতে হবে! সঙ্গে সঙ্গেই ছুড়ে দেন এক জোরালো বাউন্সার।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হায়দরাবাদ দল ভরসা রেখেছিল বাংলা জানা ক্রিকেটার রিকি ভুইয়ের ওপর। তিনি কাজ করতেন মুস্তাফিজের দোভাষী হিসেবে। এক সাক্ষাৎকারে রিকি বলেছিলেন, ‘মুস্তাফিজের সবচেয়ে ভয় দুই জিনিস, ব্যাটিং করা আর ইংরেজিতে কথা বলা!’
তবে ভাষা নিয়ে সমস্যার প্রভাব পড়েনি পারফরম্যান্সে। সেই আসরে মুস্তাফিজ ১৬ ম্যাচে শিকার করেন ১৭ উইকেট, যার বদৌলতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ জিতে নেয় শিরোপা। সেই সঙ্গে বিদেশিদের মধ্যে প্রথম উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জেতেন তিনি।
মজার বিষয় হলো, শুধু মুস্তাফিজ নন, ভাষাগত সমস্যায় পড়েছেন আরও অনেকেই। ভারতীয় পিযূষ চাওলা নিজেও অস্ট্রেলিয়ানদের ইংরেজি বুঝতে দোভাষীর সাহায্য নিয়েছিলেন। আফগান ক্রিকেটার রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবীও একে অপরের দোভাষী ছিলেন হায়দরাবাদে খেলার সময়। এমনকি গুজরাট টাইটান্সে নূর আহমেদের জন্য দোভাষীর ভূমিকায় ছিলেন রশিদ।