শিশু ওমরকে ঘিরেই যেন নতুন করে স্বপ্ন দেখছে তার বাবা আল হামিদি। গাজার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওমর। দখলদার ইসরায়েলের বিমান হামলায় ওমরের মাসহ-অন্যান্য ভাইদের মৃত্যু হয়েছে।
রাতভর বিমান হামলায় আল হাদিদির স্ত্রী এবং তাদের আরও চার ছেলে নিহত হয়। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ওমর। ৩৭ বছর বয়সী হাদিদি তার বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বণকে পেয়ে অনেকটা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, পৃথিবীতে আমার এই শিশু সন্তানটি ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই।
টানা নয়দিন ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ক্রমাগত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। গত শনিবার সকালে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মৃত মায়ের কোল থেকে ওমরকে উদ্ধার করেন উদ্ধারকর্মীরা। তার ছোট্ট পায়ের তিন জায়গায় জখম হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাদিদি জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বোমা হামলায় তার আরও চার ছেলে সুহাইব (১৩), ইয়াহইয়া (১১), আবদে রাহমান (৮) এবং ওসমান (৬) নিহত হয়েছে। একই সঙ্গে এই হামলায় তিনি তার স্ত্রী মাহা আবু হাত্তাবকেও (৩৬) হারিয়েছেন।
ছোট শিশু সন্তানকে চুমু খেয়ে তিনি বলেন, তারা আল্লাহর কাছে গেছেন। আমরাও এখানে আর বেশিদিন থাকতে চাই না। আমরা খুব শিগগিরই তাদের সঙ্গে মিলিত হবো। ইয়া আল্লাহ, এটা খুব দীর্ঘ করবেন না।
মঙ্গলবার (১৮ মে) রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে মাত্র ২৫ মিনিটে উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ১২২টি শক্তিশালী বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এ হামলায় অন্তত ৬০টি যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা গাজায় হামাসের সুড়ঙ্গ ও ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত অন্তত ৬৫টি স্থানে হামলার দাবি করেছে।
অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘যুদ্ধবিরতির’ আহ্বানের পরও গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ২২০ জনে দাঁড়িয়েছে।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলা দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২২০ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬৩ জন শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত দেড় হাজার ফিলিস্তিনি।
এছাড়া ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের তিন সেনাসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই শিশু এবং একজন ভারতীয় নারী রয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের অন্তত ৩শ জন আহত হয়েছেন।