চলতি রবি মৌসুমে খুলনা কৃষি অঞ্চলে ৪৮,৩০২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকরা, যা তাঁদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের রবি মৌসুমে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলা জুড়ে এই ফসল চাষ হয়। এই অঞ্চলের লবণাক্ততা সহনশীল উপকূলীয় এলাকাগুলোতেও ব্যাপকভাবে চাষ হয়েছে তরমুজ, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, ডাল, আলু, কুমড়া, সরিষা, ভুট্টা, গাজর, গাজর বাদাম, ক্যাপসিকামসহ নানা ধরনের সবজি ও খাদ্যশস্য।
প্রতি বছর উপকূলীয় জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দারিদ্র্য হ্রাস এবং খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার উপকূল অঞ্চলের হাজারো মানুষের জীবিকার মানোন্নয়নে সহায়ক হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) খুলনা অঞ্চলে ৪৩,৪৮৭ হেক্টর জমিতে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩৭ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। তবে বাস্তবে ৪৮,৩০২ হেক্টর জমি থেকে ১৩ লাখ ২ হাজার ৫১৯ টন ফসল উৎপাদিত হয়েছে।
ডিএই কর্মকর্তারা জানান, রবি মৌসুমের ৮০ শতাংশের বেশি ফসল ঈদুল ফিতরের আগেই কাটা হয়েছে এবং বাকি অংশ আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কাটা শেষ হবে।
ডিএই খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “খুলনা কৃষি অঞ্চলের কৃষকরা ইতোমধ্যে তাঁদের রবি ফসল কেটে নিয়েছেন এবং বাম্পার ফলন পেয়েছেন। অনুকূল আবহাওয়া ও সমন্বিত সেচ ব্যবস্থার কারণে কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত ফলন পেয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক কৃষকদের মাঝে কৃষিঋণ বিতরণ করেছে, যা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
ডিএই সূত্রে জানা গেছে, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উৎসাহিত করতে সরকার তাঁদের মাঝে উন্নতমানের বীজ ও সার বিতরণ করেছে।
খুলনার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষক ফরিদ আলী, মনিরুজ্জামান গাজী, মোজাম্মেল হাওলাদার এবং শহীদ মিয়া জানান, তাঁরা তরমুজসহ নানা ধরনের ফসল চাষ করে তাঁদের ভাগ্য বদলাতে পেরেছেন।
বটিয়াঘাটা উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের কৃষক শহীদত গাজী বলেন, “অনেক কৃষক স্বল্পমেয়াদী আমন ধান কাটার পর ওই জমিতে সরিষা ও তরমুজ চাষ করে ফসলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করেছেন এবং অধিক লাভবান হয়েছেন।”
সূত্র মতে, চলতি রবি মৌসুমে প্রায় এক লাখ পরিবার স্বনির্ভর হয়েছে এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় তাদের জীবিকা উন্নত হয়েছে।