চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ২৮ মার্চ বৈঠক করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া চীনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক হবে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
চারদিনের সফরে ২৬ মার্চ চীন যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সে সফর নিয়ে কথা বলতে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। বৈঠকে সফরসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এটা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সফর। দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করছে। ২৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন। এশিয়ার শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি বড় বড় কোম্পানির সিইওরা সেখানে থাকেন। সাইডলাইনে চীনের বড় কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার মিটিং হতে পারে। এসব মিটিংয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে চীনের কারখানাগুলো রিলোকেট করা।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ফোকাস থাকবে চীনের কোম্পানিগুলো যেন তাদের কারখানা বাংলাদেশে রিলোকেট করে। প্রধান উপদেষ্টা আগেও চীনের সোলার কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কারণ বৈশ্বিকভাবে চীন অনেক ট্রেড ব্যারিয়ারের মধ্যে পড়ে গেছে। বাংলাদেশ থেকে উৎপাদন করে যদি রফতানি করে, তাহলে কোনো বাধার মুখে পড়বে না। দুটি কোম্পানি বাংলাদেশে অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর একটি হচ্ছে লংগি। এটা বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোলার প্যানেল কোম্পানি। বিশ্বের ৭০ ভাগ সোলার প্যানেল তারা তৈরি করে। বাংলাদেশে তারা আসা মানে এ খাতে প্রচুর জব তৈরি হবে এবং এক্সপোর্ট করা যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সফরকালে পিকিং ইউনিভার্সিটিতে বক্তব্য দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। বিশ্ববিদ্যালয়টি ড. ইউনূসকে একটি সম্মানসূচক ডিগ্রি দেবে। এছাড়া তিনি চীনের হাই-টেক পার্কে যাবেন। সেখানে ইলেকট্রিক ভেহিকল, সোলার প্লান্ট ও চিপস কারখানা পরিদর্শন করবেন। চীনের কারখানাগুলো কীভাবে বাংলাদেশে স্থানান্তর করা যায় এটা হবে সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য। অন্তর্বর্তী সরকার উৎপাদন শিল্পে বড় ধরনের বিপ্লব ঘটাতে চায়। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা কতটা বাড়ানো যায়, সেদিকেও সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘৫ আগস্টের পর চীনের কোম্পানিগুলো গত সাত মাসে বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। এ সফরের পর প্রচুর বিনিয়োগ আসবে। দেশটির হাসপাতাল চেইনগুলোও যেন বাংলাদেশে এসে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে, প্রধান উপদেষ্টা সেটাও চাচ্ছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।