দৌড় প্রতিযোগিতায় সবার পরে শেষ করেও দর্শকদের এমন অভিবাদন পাওয়া যায়, প্যারিস অলিম্পিকের ম্যারাথনে না নামলে জানতেই পারতেন না ভুটানের কিনজাং লামো। এতে অলিম্পিক গেমসের মাহাত্ম্য বোঝা গেল আরও একবার। রোববার প্যারিস অলিম্পিকের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় মেয়েদের ম্যারাথন দৌড়। এটি ছিল এবারের আসরের শেষ ইভেন্ট। এখানে মোট ৯১জন অ্যাথলেট। যাদের মধ্যে দৌড় শেষ করেন ৮০ জন। ১১ জন অ্যাথলেট ইভেন্ট শেষই করতে পারেননি।
এই ম্যারাথনের শেষ দুটি স্থান পেয়েছেন নেপাল এবং ভুটানের প্রতিযোগী। দৌড় শেষ করা ৮০ জন্যের মধ্যে ৭৯ নম্বরে শেষ করেছেন নেপালের সন্তোষী শ্রেষ্ঠা। আর সবার শেষে দৌড় শেষ করেছেন ভুটানের কিনজাং লামো। ৮০তম স্থান পেয়েও নজর কেড়ে নিয়েছেন লামো। তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা।
সোনাজয়ী নেদারল্যান্ডসের সিফান হাসান দৌড় শেষ করার সময় লামো অর্ধেকের বেশি কিছু পথ অতিক্রম করেছিলেন। নেপালের সন্তোষী ৭৯ নম্বরে দৌড়ে শেষ করার সময়ও ফিনিশিং পয়েন্ট থেকে বহু দূরে ছিলেন লামো। তবু দৌড় থামাননি। হাসানের ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ৪ সেকেন্ড পর দৌড় শেষ হয় তার। এমনকি নেপালের সন্তোষীও লামোর ৫৭ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড আগে শেষ করেন।
শেষ এক ঘণ্টা প্রায় একাই দৌড়েছেন ভুটানের প্রতিযোগী। একের পর এক অ্যাথলেট যখন মাঝপথেই দৌড় ছেড়ে বের হয়ে গেছেন, লামো তখনও হাল ছাড়েননি। তিনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি পাশে পেয়ে যান প্যারিসের দর্শকদের। রাস্তার দু’ধারে তো বটেই, এমনকি শেষ কয়েক কিলোমিটারে দর্শকরা সাইকেল চালিয়েও তাকে সঙ্গ দেন। তার দৌড় শেষ হওয়ার জন্য অবশ্য অপেক্ষা করেছেন আয়োজকেরাও। বহু দর্শককেও ফিনিশিং লাইনের কাছে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে লামোর জন্য। তিনি ফিনিশিং পয়েন্টের কাছাকাছি পৌঁছালে দর্শকেরা তাকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করেন। দৌড় না থামানোর জন্য অনেকে উঠে দাঁড়িয়ে তার চেষ্টাকে কুর্নিশ জানান। দর্শকদের অনুপ্রেরণায় শেষ দিকে দৌড়ের গতিও কিছুটা বৃদ্ধি করেন। শেষ পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা ৫২ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে ম্যারাথন শেষ করেন লামো। এটাই তার জীবনের সেরা সময়। সেই মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
প্যারিস অলিম্পিকে তার পদক জোটেনি। তবে দৌড়ের শেষ মুহূর্তটা লামোর খেলোয়াড় জীবনের সব থেকে বড় পাওনা হিসেবে বিবেচিত হবে নিশ্চিত।