সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতরা। সরকারের অন্তত চার উপদেষ্টা না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীরা।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) থেকে শ্যামলী-আগারগাঁও সংযোগ সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা। সর্বশেষ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ১১টা) বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাত ১১টা পর্যন্ত আহত এসব আন্দোলনকারীরা হুইলচেয়ারে, কেউ ভাঙা পা নিয়েই একটা চেয়ার পেতে বসে আছেন। আহত এসব আন্দোলনকারীদের দাবি, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকার গঠন করা হয়েছে। অথচ গত তিন মাসে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তাদের দেখতে আসেননি। তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে কোনও খোঁজ-খবর নেননি। তিন মাস পর তিনি (স্বাস্থ্য উপদেষ্টা) হাসপাতালে এলেও দুই-একজন ছাড়া আর কোনও আহত রোগীর সঙ্গে কথা বলেননি।
ফাহিমুর রহমান নামক এক আহত আন্দোলনকারী বলেন, তিন মাস পর আমাদের দেখতে এসেছেন উপদেষ্টা, আমরা কেমন আছি জিজ্ঞাস করার প্রয়োজনও মনে করলেন না। আমাদের প্রয়োজন কী ফুরিয়ে গেছে?
তিনি বলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে আজ পথে বসেছি। স্বাস্থ্য, তথ্য, সমাজকল্যাণ ও ক্রীড়া উপদেষ্টাকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে উপস্থিত হতে হবে। তারা না আসলে আমরা পথেই রাত যাপন করবো।
দুপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে আরেক রোগী বলেন, দুপুরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এলে তার সঙ্গে থাকা একজন আমাদের এক ভাইকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক। কেন আমাদের সঙ্গে এই আচরণ? তিন মাস হয়ে গেলো কয়টা রোগী সুস্থ হতে পেরেছে? আমাদের সুচিকিৎসা হচ্ছে না।
এর আগে রাতে সাড়ে ৯টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থানরত আহতদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। সমস্যা সমাধানে উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, তিন মাস পর আমার ভাইয়েরা এখনও রাস্তায় আছে, এটাই আমার জন্য সবচেয়ে লজ্জার। এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায়, সে জন্য আমাকে একটু সময় দিন। তবে হাসনাতের কথার প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীরা ৪ উপদেষ্টা আসলেই সড়ক ছাড়বেন বলে জানান।