‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে খুলনার নবাগত জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নাগরিক সমাজ। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে খুলনার সর্বস্তরের নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রুবার সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে খুলনার নাগরিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন কর্মীসহ বিভিন্ন সংস্থার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে টানা ৪ বছর ছাত্রলীগের সভাপতি বাহাদুর বেপারীর একান্ত সহযোগী ও পোষ্য ক্যাডার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাস ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ২৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌলভীবাজারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে শিরোনাম হয়েছিলেন তিনি। বিনাভোটের অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যাযজ্ঞে দলীয় বিবেচনায় মাঠ প্রশাসন সাজিয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান প্রশমনে মাঠপর্যায়ের প্রশাসন বদলি কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। যখন-যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন; তখন সেখানেই গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার পোষ্য ক্যাডার হিসেবে আওয়ামী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। অবিলম্বে খুলনার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদ থেকে তাকে প্রত্যাহার করে গণহত্যায় সহযোগিতা করার অপরাধে শাস্তির জোর দাবি জানান তারা।
বক্তারা আরও বলেন, ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি খুলনার বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সরাসরি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহস্রাধিক জীবনের বিনিময়ে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে। অবিলম্বে খুলনা থেকে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহারে দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে খুলনাবাসী। মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের মতো কর্মকর্তাদের হাতে খুলনা তথা বাংলাদেশ নিরাপদ নয় বলে দাবি করেন বক্তারা।
প্রসঙ্গত, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে গত ৯ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে খুলনার জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব দেয় সরকার। এর আগে গত ২০ আগস্ট খুলনার সর্বশেষ জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনকে প্রত্যাহার করে বদলি করা হয়।