সব রোমাঞ্চ যেন শেষের জন্যই তুলে রেখেছিলেন ফুটবল বিধাতা। ইয়োহান ক্রুইফ অ্যারেনায় গতকাল ম্যারাথন এক পেনাল্টি শুটআউট দেখল বিশ্ব। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি ২৫ মিনিট ধরে টাইব্রেকার হয় আয়াক্স-পানাথিনাইকোস ম্যাচে। ম্যারাথন সেই টাইব্রেকারে পরে ১৩-১২ ব্যবধানে জয় পায় ডাচ ক্লাব আয়াক্স।
উয়েফা ইউরোপা লিগ তৃতীয় কোয়ালিফাই রাউন্ডে ম্যাচে এমন ঘটনা ঘটেছে। দুই লেগের প্রথমটিতে ১-০ গোলে প্রতিপক্ষের মাঠে জয় পেয়েছিল আয়াক্স। গতকাল ঘরের মাঠে গোলশুন্য ড্র করলেই পরের রাউন্ডে যেত তারা। দ্বিতীয় লেগে সে পথেই ছিল তারা।তবে ম্যাচ শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে ৮৯ মিনিটে গোল করে ম্যাচ জমিয়ে দেন তিতে।দুই লেগ মিলিয়ে ১-১ ড্র হওয়া ম্যাচ পরে অতিরিক্ত সময়ে গড়ালেও কোন দল জয়ের মুখ দেখেনি। পরে টাইব্রেকারে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়। সব রোমাঞ্চ যেন শেষের জন্যই ছিল।
শুরুতে একাদশের সব খেলোয়াড় এক এক করে পেনাল্টি নেওয়ার পরও যখন ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয় না তখন কয়েকজন খেলোয়াড় দ্বিতীয়বার পেনাল্টি শট নেন। এভাবে একের পর এক চেষ্টায় যখন ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয় তখন মোট কিক নেওয়া হয় ৩৪টি।২৫ মিনিট ধরে চলে এই পেনাল্টি কিক। ৫টি পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে এবং একটি সফল স্পটকিকে ম্যাচের নায়ক বনে যান আয়াক্সের গোলরক্ষক রেমকো পাসভার। তবে ৪০ বছর বয়সী গোলরক্ষক শেষে নায়ক বনতে সহায়তা করেন তার সতীর্থ অ্যান্টোন গায়েই।
তার শটেই ম্যারাথন পেনাল্টি শুটআউটের নিষ্পত্তি হয়।ডাচদের হয়ে দুইবার শট নিয়ে দুইবারই ব্যর্থ হন আয়াক্সের ডাচ স্ট্রাইকার ব্রায়ান ব্রোবি। তার সঙ্গে মিস করেন বার্ট্রান্ড ত্রায়োয়ে এবং উইরি বাস। উয়েফার প্রতিযোগিতায় ফলাফলের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়। সবশেষ মৌসুমে কনফারেন্স লিগের কোয়ালিফায়ারের গ্লেনটোরানকে ১৪-১৩ ব্যবধানে হারিয়েছিল জিরা ইউনাইটেড।
মোট শটের ক্ষেত্রে উয়েফার প্রতিযোগিতায় এটি বিশ্বরেকর্ড। এর আগে ২০০৭ সালে উইরোপিয়ান অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে ৩২ শটের টাইব্রেকার হয়েছিল। সে ইংল্যান্ডকে ১৩-১২ ব্যবধানে হারিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। বিশ্বরেকর্ড মালিক ইসরায়েল তৃতীয় বিভাগের দুই দল এসসি দিমোনা এবং শিমসন তেল আবিবের। সেমিফাইনালের প্লেঅফ ম্যাচে ৫৬ শটের দীর্ঘতম টাইব্রেকারে ২৩-২২ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল দিমোনা।
গতকালের এমন ম্যারাথন টাইব্রেকারকে এক কথায় অবিশ্বাস্য বলেছেন আয়াক্সের কোচ ফ্রান্সিসকো ফারিওলি। তিনি বলেছেন,‘আজ রাতে দলের (গতকাল) স্পিরিট এবং ডেডিকেশন ছিল সত্যি অবিশ্বাস্য। আমরা নিঁখুত নই। তবে আপনি বলতে পারবেন না খেলোয়াড়ের সবকিছু নিংড়ে দেয়নি।’