রাতভর নাটকীয়তা ও কর্মী-সমর্থকদের প্রতিরোধের পর অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। শুক্রবার (৯ মে) ভোর পৌনে ৬টার দিকে শহরের দেওভোগ এলাকার নিজ বাসভবন ‘চুনকা কুটির’ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে দুটি থানায় ৫টি মামলা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে আইভী দিনের আলো দেখা যাবার পর পুলিশের সঙ্গে যাবেন ঘোষণা দিয়ে সকালে থানার উদ্দেশ্যে বাড়ি ত্যাগ করেন ।
বাড়ি থেকে বের হবার আগে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলায় যদি আমার শাস্তি হয় তাহলে আমি তা মাথা পেত নেব।
আমি তো কোনো অন্যায় করিনি, চাঁদাবাজি করিনি, হত্যা করিনি। যখন নারায়ণগঞ্জের একটা মানুষও কথা বলত না প্রতিবাদ করত না তখন ত্বকী হত্যার প্রতিবাদসহ সকল প্রতিবাদ আমি করেছি। আমি আপনাদের সেবা দিয়েছি। তিনি বলেন, আপনারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, নতুন সরকার এসেছে।
আমি তো কোনো অপরাধ করিনি। তাহলে কেন আমাকে গ্রেপ্তার জানতে চাই সরকারের কাছে। আমার ভাইকে আমরা হারিয়েছি ১ মাস হয়নি, ৩টা ছেলে মেয়ে। এমন অবস্থায় আমি তো বাড়িতেই ছিলাম, পালাইনি, তবে কেন গ্রেপ্তার?
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৪টি ও ফতুল্লা থানায় ১টি মামলা আছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে পুলিশের একটি দল শহরের দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত আইভীর বাড়ি চুনকা কুটিরে প্রবেশ করেন। এ সময় আইভীর গ্রেপ্তারের খবরে স্থানীয় বাসিন্দারা ও তার নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে আসলে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় আইভীর বাড়ির দিকে যাওয়ার চারটি রাস্তায় বাশ, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আইভীর সমর্থকেরা। আশেপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সকলকে আইভীর বাড়ির দিকে রওয়ানা দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদি জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৪টি ও ফতুল্লা থানায় ১টি মামলা আছে।
তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলায় গ্রেপ্তার করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।