এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে আজ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলতে এ ম্যাচে জয় দরকার ছিল লাল-সবুজের দলের। তবে ম্যাচে হামজা চৌধুরির দুর্দান্ত গোলে প্রথমে লিড নিলেও শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হল জামাল ভূঁইয়াদের। দারুণ শুরু করেও শেষ পর্যন্ত জয় হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের। ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হংকংয়ের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর ম্যাচে ৪–৩ গোলে হেরে মাঠ ছাড়ে হাভিয়ের কাবরেরা’র দল।
ঘরের মাঠে এ ম্যাচে প্রথমে লিডের দেখা পেয়েছিল বাংলাদেশই। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে হামজাকে বেঞ্চের ফুটবলার বলে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছিলেন হংকংয়ের কোচ। সেই হামজার গোলেই প্রথম গোল হজম করে সফরকারীরা। ম্যাচের ১৩ মিনিটেই লিড নেয় স্বাগতিকরা। বাঁ দিক থেকে ফ্রি-কিক নিতে আসেন হামজা। তার নিচু ক্রসটি জালে জড়ায় এক ডিফেন্ডারের মাথায় লেগে দিক বদলে। গ্যালারিতে তখন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে দর্শকরা।
এই গোলে যেন নতুন উদ্দীপনা ফিরে পায় বাংলাদেশ। সাধারণত নিচে নেমে রক্ষণ সাজানো দলটি এবার খেলতে শুরু করে উপরে ওঠে। প্রথম ৩০ মিনিট বলের দখলেও ছিল বেশ ভালো। তবে প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ঘটে বিপত্তি। কর্নার থেকে আসা বল ঠিকভাবে ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় লাল-সবুজের দলের রক্ষণভাগ। বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফয়সাল আহমেদের হেড বিপজ্জনক জায়গায় পড়লে, সেটিই পেয়ে যান এভারটন কামারগো- সহজেই জালে জড়িয়ে দেন বল।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের চিত্র পুরোপুরি বদলে যায়। ক্রমেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ৫০ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় রাফায়েল মেরকিস কাছ থেকে গোল করে হংকংকে এগিয়ে দেন। পুরো স্টেডিয়াম স্তব্ধ, তবে হংকংয়ের সমর্থকদের গ্যালারি তখন উল্লাসে মাতোয়ারা। কাবরেরা এরপর একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন আনেন। শমিত শোম, জামাল ভূঁইয়া ও ফাহিমিদুল ইসলামকে নামানো হয় সমতা ফেরানোর আশায়। কিন্তু সেই কৌশল সফল হয়নি; বরং ৭৪ মিনিটে আবারও গোল হজম করে বাংলাদেশ।
এভারটন দারুণভাবে বল পাস করেন সাদ উদ্দিনের পায়ের ফাঁক দিয়ে, সেটি পেয়ে যান মেরকিস। এবারও নির্ভুল ফিনিশিং, নিজের দ্বিতীয় গোল, হংকংয়ের লিড ৩–১। গ্যালারিতে তখন নিস্তব্ধতা, অনেক দর্শক তখনই বেরিয়ে যেতে শুরু করেন।
তবে ১০ মিনিট পরই কিছুটা প্রাণ ফিরে আসে। প্রতিপক্ষ গোলকিপারের ভুলে সহজ এক সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল করেন শেখ মোরসালিন। এরপর অতিরিক্ত সময়ে সাহসী এক প্রচেষ্টায় গোল করেন বদলি খেলোয়াড় শমিত শোম, অতিরিক্ত সময়ের খেলা যখন বাকি আছে আর ১ মিনিট, তখনই মোরসালিনের কর্ণার কিক থেকে হেডে গোল করেন শমিত। তাতে ম্যাচ গড়ায় ৩–৩ এ! আবারও জেগে ওঠে আশা।
কিন্তু শেষ হাসি হাসে হংকং। ইনজুরি টাইমের একেবারে শেষ মুহূর্তে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রাফায়েল মেরকিস, নিশ্চিত করেন অতিথিদের ৪–৩ গোলের নাটকীয় জয়। বাংলাদেশের দুর্দান্ত শুরু ও লড়াই সত্ত্বেও রক্ষণভাগের ভুলই শেষ পর্যন্ত পার্থক্য গড়ে দেয় ম্যাচে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত