ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের ওপর তীব্র হামলা হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, ‘গাজা শহরের যুদ্ধ সত্যিই তীব্রতর হয়ে উঠেছে। আল কুদস হাসপাতালের কাছে একটি ভয়াবহ লড়াই চলছে।

ইসরায়েলি সেনাদের ট্যাঙ্কগুলো আল কুদস হাসপাতালের কাছাকাছি এগিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ওপর হামলা করে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা।

বিবিসি সংবাদদাতা রুশদি আবুলউফ বলেন, আমি আজ সকালে এমন একজনের সঙ্গে কথা বলছিলাম যিনি বলেছিলেন যে এ এলাকায় একটি ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে।

এই এলাকায় কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিমান থেকে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করা হয়েছিল। এখন যুদ্ধজাহাজ ও কামান থেকে গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।

গাজার আবাসিক এলাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলা ৩৪তম দিনে পড়েছে। নতুন দফা আগ্রাসনে গাজা উপত্যকার উত্তরের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে দু’টি আবাসিক বাড়িতে বোমা হামলায় আরও ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

ইসরায়েলি জঙ্গিবিমানগুলো জেনিন শহরের আশ-শেফা হাসপাতালেও বোমাবর্ষণ করেছে। গাজার বিভিন্ন এলাকায় আজ সকালেও বোমা হামলা চালিয়েছে তারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই উপত্যকায় এখন আর কোনো ভূমিই ইসরায়েলি বোমা হামলা থেকে রক্ষা পায়নি।

মানবাধিকারসহ আন্তর্জাতিক কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইসরায়েল গাজার হাসপাতাল, গির্জা, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বেসামরিক স্থাপনায় নির্বিচারে হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৫৬৯ ফিলিস্তিনি গণহত্যার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে চার হাজার ৩২৪ শিশু এবং দুই হাজার ৮২৩ জন নারী। আহত হয়েছে আরও ২৬ হাজার ৪৭৫ ফিলিস্তিনি। গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ১৪ লাখই গৃহহীন উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। ৩২ হাজার ভবন এবং ৪৪টি মেডিকেল সেন্টার ধ্বংস হয়েছে। তারপরও ইসরায়েলিরা স্থল যুদ্ধে তাদের ঘোষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি এবং রণাঙ্গনেও তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৫১ সেনা নিহত হয়েছে। এই খবর এমন সময় প্রকাশ পেল যখন বিভিন্ন সূত্র গত সোমবার রাতে জানিয়েছে যে ইসরায়েলের সৈন্য নিহতের সংখ্যা প্রকাশের দায়ে এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আফ্রায়িম মোরদেখাই নামের ওই সাংবাদিক বলেছিলেন, তিনি তেলআবিবের একটি হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনাদের স্তুপীকৃত লাশ দেখেছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিহত সেনাদের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করছে না বলেও তিনি জানিয়েছেন।

সূত্র : বিবিসি, আল বাওয়াবা, আল-জাজিরা