করোনা মহামারির নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিস্তার রোধে ১১ দফা বিধিনিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। ১১ দফার একটি হচ্ছে, আবাসিক হোটেলে থাকতে ও রেস্তোরাঁয় খেতে বা খাবার কিনতে হলে দেখাতে হবে করোনা টিকা সনদ (কার্ড)।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও করোনা টিকা সনদ দেখা হচ্ছে না রেস্তোরাঁ ও আবাসিক হোটেলগুলোতে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁ ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
দেখা যায়, খাবারের রেস্তোরাঁ বা খাবারের হোটেলে দেখতে চাওয়া হচ্ছে না টিকা সনদ। সাধারণ মানুষ অবাধে কিনছেন খাবার। অনেকে হোটেলে বসে খাচ্ছেন। তবে কাউকেই দেখাতে হচ্ছে না টিকা সনদ। সরকারিভাবেও করা হচ্ছে না কোনো নজরদারি।
মিরপুর ১২ নম্বরের খাবারের হোটেলগুলোতে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ অবাধে খাবার কিনছেন। দেখা হচ্ছে না কোনো টিকা সনদ।
এক হোটেলের মালিক মো. মিজান বলেন, সরকার বলছে ১৩ তারিখ থেকে ক্রেতাদের টিকা সনদ দেখে খাবার বিক্রি করতে। এখনও সেরকমভাবে দেখা হচ্ছে না টিকা সনদ। অনেকে এখনও টিকা দিতে পারেননি, সনদ সঙ্গে আনেননি, কেউ আবার একটি টিকা দিয়েছেন। বহু কারণে টিকা সনদ দেখাতে পারছেন না ক্রেতারা। তাই বলে কি আমরা খাবার বিক্রি করব না?
ওই হোটেলে নাস্তা করতে আসা এক বেসরকারি কর্মকর্তা মাহবুব হোসেন চৌধুরী বলেন, সকালের নাস্তা করতে এসেছি। আমি টিকা দিয়েছি। অফিসে যাব, তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হয়েছি। তাই টিকা সনদ সঙ্গে নিয়ে আসিনি। এরপর থেকে খাবার খেতে এলে নিয়ে আসব।
মিরপুর ১১ নম্বরের হজরত শাহজালাল (র.) রেস্টুরেন্টে কর্মচারী মো. রহমান বলেন, এখনও ক্রেতাদের টিকা সনদ দেখা হচ্ছে না। অনেকে একটা টিকা দিয়েছেন, তারা কি করবেন? কঠোরভাবে যদি টিকা সনদ দেখতে চাই, তাহলে আমরা খাবার বিক্রি করতে পারব না। তাহলে আমাদের রেস্টুরেন্টে বন্ধ করে রাখতে হবে।
মিরপুর ১০ নম্বরের এইচ এম ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, আগত অতিথিদের কাছে টিকা সনদ দেখতে চাওয়া হচ্ছে না।
তবে বিষয়টি এড়িয়ে গিলে এইচ এম ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলের এমডি হাবিবুর রহমান বাদল বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী টিকা সনদ দেখেই আমাদের হোটেলে আসা সব অতিথিকে রুম ভাড়া দেব। আজ থেকেই প্রজ্ঞাপন কার্যকর হয়েছে। যারা টিকা সনদ দেখাতে পারবেন না, তাদের রুম ভাড়া দেব না।
তিনি আরও বলেন, আমার হোটেলে ১০-১২ স্টাফ আছে। হোটেল ব্যবসা খুবই খারাপ যাচ্ছে। সাত থেকে আটটি রুমে আমাদের অতিথি আছেন। বাকি সব রুম ফাঁকা। তারপরও সরকার যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে, সে অনুযায়ী আমরা হোটেল চালাব।
এর আগে, সোমবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়, করোনা ভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯)- এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ও দেশে এ রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।
পিএসএন/এমঅাই
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত