রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চলছে তিন দিনব্যাপী ‘ঢাকা বাইক শো-২০২২।’ এ শোতে নতুন মডেলের মোটরসাইকেল সারিবদ্ধভাবে সাজানো হয়েছে। ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে দেখছেন ও দরদাম করছেন। পাশেই রয়েছে তিনটি এলইডি। এই এলইডিতে কিছুক্ষণ পরপর লেখা উঠছে- গতি সর্বদা নিয়ন্ত্রিত রাখুন, রাইডিং শুরুর আগে অবশ্যই লুকিং গ্লাস নিজের সুবিধা মতো অ্যাডজাস্ট করুন, নিয়মিত বাইক সার্ভিস করা হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে যায়, একটি সড়ক দুর্ঘটনা একটি পরিবারের সবার জীবনের কান্না।
মোটরসাইকেলের প্যাভিলিয়নে এমন জনসচেতনতামূলক বার্তা দেখে অনেকেই অবাক হচ্ছেন। মোটরসাইকেল কেনার পাশাপাশি কীভাবে নিরাপদে চালানো যায়, তা সংশ্লিষ্টদের কাছে জেনে নিচ্ছেন কেউ কেউ। আবার অনেকেই প্যাভিলিয়নের সামনে মাঠে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এছাড়া মোটরসাইকেলের হেলমেটসহ নিরাপত্তা সামগ্রী কিনছেন ক্রেতারা।
শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে আইসিসিবিতে সুজুকির প্যাভিলিয়নে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
সেমস গ্লোবাল ইউএসএ- এর আয়োজনে বুধবার (২৩ জুন) থেকে ‘১৫ তম ঢাকা মোটর শো-২০২২’ শুরু হয়। মোটরপ্রেমীদের জন্য এই প্রদর্শনীতে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি, বাইকসহ অটোমোটিভ জগতের বিপুল সমারোহ রয়েছে। ঢাকা মোটর শোর এই আয়োজনের সঙ্গে চলছে 'ষষ্ঠ ঢাকা বাইক শো-২০২২, পঞ্চম ঢাকা অটোপার্টস শো ২০২২ ও চতুর্থ ঢাকা কমার্শিয়াল অটোমোটিভ শো ২০২২। আজ (শনিবার) রাত ৯টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে।
আইসিসিবিতে পৃথক পাঁচটি প্যাভিলিয়নে চলছে ঢাকা বাইক শো। দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন মডেলের বাইক এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ব্যতিক্রমভাবে প্যাভিলিয়ন সাজিয়েছে সুজুকি। তাদের প্যাভিলিয়নে আলাদা করে ফ্রিতে সুজুকি মোটরসাইকেল সার্ভিসিং করার ব্যবস্থা রয়েছে। মোটরপার্স বিক্রির জন্য প্যাভিলিয়নে আলাদা স্টল করা হয়েছে। এছাড়া সামনে ছোট্ট মাঠ রাখা হয়েছে। সেখানে মোটরসাইকেল চালিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন ক্রেতারা। একটি প্যাভিলিয়নে এমন সব আয়োজন থাকায় ক্রেতাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দেখা যায়।
তিন বন্ধুকে নিয়ে ঢাকা বাইক শোতে এসেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীন রায়হান। তিনি বলেন, ঢাকা বাইক শোতে নতুন মডেলের কোনো মোটরসাইকেল আসছে কি না, তা দেখতে এসেছি। বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখছি। পছন্দ হলে কিনে ফেলবো।
সুজুকির মার্কেটিং বিভাগের ব্যবস্থাপক রিজবী করিম বলেন, এবারের বাইক শোতে আমরা ১৩টি মডেলের বাইক এনেছি। এর মধ্যে নির্দিষ্ট মডেলের পাঁচটি বাইকে তিন থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত ডিসকাউন্ট চলছে। এছাড়া নির্দিষ্ট বাইক কিনলে হেলমেট, টি-শার্ট উপহার দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গত দুদিনে ৩০টি বাইক বিক্রি হয়েছে। তিনশটি বাইক ফ্রিতে সার্ভিসিং নিয়েছে। আজও প্যাভিলিয়নে ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে।
অন্যদিকে, নতুন ও পুরোনো মডেল মিলিয়ে ১৭টি মোটরসাইকেলে প্যাভিলিয়ন সাজিয়েছে রানার। এর মধ্যে স্কুটির চাহিদা বেশি রয়েছে। তবে এই প্যাভিলিয়ন থেকে মোটরসাইকেল বিক্রি করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক ফারজানা আহমেদ।
তিনি বলেন, আমরা এই বাইক শোতে শুধু বুকিং নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত দুইশ জন বাইক বুকিং দিয়েছেন। শো শেষ হলে দুই-এক দিনের মধ্যে গ্রাহকদের ঠিকানায় বাইক পৌঁছে দেওয়া হবে।
একইভাবে শোতে জায়গা পেয়েছে বাজাজ, হোন্ডাসহ অন্যান্য কোম্পানির বাইক।
এই প্রদর্শনীর নানা বিষয় তুলে ধরে সেমস গ্লোবালের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড রূপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলাম বলেন, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে ঢাকা মোটর শো আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এই মহামারির কারণে সারাবিশ্বের ইভেন্ট ও এক্সিবিশন সেক্টর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার করোনার প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় বড় পরিসরে ঢাকা মোটর শো আয়োজন করা হয়েছে। প্রচুর মানুষ শোতে আসছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত